শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:৪৬ অপরাহ্ন

কামারজানি ইউনিয়নের গো-ঘাট গ্রামটি ব্রহ্মপুত্র নদের মারাত্মকভাবে ভাঙনে বিপন্ন ॥ ১৫৫টি বসতবাড়ি

কামারজানি ইউনিয়নের গো-ঘাট গ্রামটি ব্রহ্মপুত্র নদের মারাত্মকভাবে ভাঙনে বিপন্ন ॥ ১৫৫টি বসতবাড়ি

স্টাফ রিপোর্টারঃ বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই গাইবান্ধা সদর উপজেলার কামারজানি ইউনিয়ন সদর সংলগ্ন গো-ঘাট গ্রামে ব্রহ্মপুত্র নদে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। গত এক সপ্তাহে এ গ্রামের ১শ’ ৫৫টি বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। আরও শতাধিক ঘরবাড়ি মারাত্মক হুমকির মুখে রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত সাত বছর ধরে গোঘাট গ্রামটিতে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। পার্শ্ববর্তী কামারজানি বন্দর রক্ষায় সিসি ব্লক দ্বারা তীর সংরক্ষণের কাজ করা হলেও এ গ্রামটি রক্ষায় কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ফলে প্রতিবছরই এ গ্রামটি নদী ভাঙনের শিকার হচ্ছে। একসময় অর্থনৈতিকভাবে সম্বলিত গোঘাট গ্রামটিতে প্রায় ৮ হাজার পরিবারের বসবাস ছিল। গ্রামটি চার ভাগের একভাগ এলাকা ভাঙনের মুখে টিকে রয়েছে। বর্তমানে এ গ্রামটিতে মাত্র এক হাজার পরিবার ভয়ভীতি নিয়ে বসবাস করছে। এভাবে ভাঙন অব্যাহত থাকলে আগামী দু’ থেকে তিন বছরের মধ্যে কামারজানির এ ঐতিহ্যবাহি গো-ঘাট গ্রামটির অস্তিত্ব বিলুপ্ত হয়ে যাবে বলে আশংকা করা হচ্ছে।
এ গ্রামের বাসিন্দা পুরোহিত প্রতাপ চক্রবর্ত্তী জানান, গত এক সপ্তাহে তার ৩টি ঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। অন্য ঘরগুলো ভাঙনের মুখে। কামারজানি বন্দরের ব্যবসায়ি গোঘাট গ্রামের বাসিন্দা তাপস কুমার সাহা জানান, তার চারটি ঘর ইতিমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। প্রবীণ শিক্ষক অমুল্য চন্দ্র সাহার ৫টি ঘর নদী ভাঙনের শিকার হয়েছে। তিনি এখন ঘরবাড়ি হারিয়ে এখন প্রায় নিঃস্ব। চরম দুর্দশার মধ্যে তার দিন কাটছে। এরকম আরও অনেকের ঘরবাড়ি ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনের শিকার হয়েছে। ফলে গ্রামটির অস্তিত্ব এখন বিপন্ন।
ওই গ্রামের লোকজন জানান, বিভিন্ন সময়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড উপজেলা ও জেলা প্রশাসনের কাছে নদী ভাঙন ঠেকানোর জন্য কার্যকর ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। কিন্তু ভাঙন ঠেকানোর জন্য কোন কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাইবান্ধার নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মোখলেছুর রহমান জানান, গোঘাট এলাকায় ব্যাপক ভাঙনের পরিপ্রেক্ষিতে ব্রহ্মপুত্রের তীরে বালির বস্তা স্থাপন করে ভাঙন রোধের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তিনি আরও জানান, কামারজানি থেকে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার শ্রীপুর, লালচামার, কাপাসিয়া ও ছয়ঘড়িয়া পর্যন্ত সাড়ে ৫ কিলোমিটার জুড়ে তিস্তা নদীর ভাঙন ঠেকাতে সিসি ব্লক দ্বারা তীর সংরক্ষণের কাজ হাতে নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে একনেকে এ প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে। এজন্য নতুন করে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৪০২ কোটি টাকা। কাজ শুরু হলে গো-ঘাটসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার ভাঙন রোধ করা সম্ভব হবে।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

নিউজটি শেয়ান করুন

© All Rights Reserved © 2019
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com