শুক্রবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৯:১২ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টারঃ উত্তরের নদী বিধৌত জেলা গাইবান্ধার প্রতিটি গ্রামেই বেশ কিছু খাল-বিল রয়েছে। প্রতিবছরের এই শীত মৌসুমে ঝাঁকে ঝাঁকে আসতে শুরু করে বিভিন্ন জাতের অতিথি পাখি। ঠিক এ বছরেও পাখির কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে উঠছে এই অঞ্চল এরই মধ্যে এসব পাখি নিধণ করতে ব্যস্ত পেশাদার শিকারীরা । বিকেলে সোনালী আভার সাথে মায়াবি সন্ধ্যায় এসব অতিথি পাখির বিচরণ জেলার বিলগুলোর নৈসর্গিক রূপ আরো বাড়িয়ে তোলে। এমন মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিনই ছুটে আসেন দর্শনার্থীরা। অথচ ফাঁদ পেতে অতিথি পাখি শিকার করায় হুমকির মুখে পড়েছে এসব স্থানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য।
স্থানীয়রা জানান, প্রতিবছরের নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাসে ওইসব বিলে পানকৌড়ি ও সাদা বকসহ আরও অসংখ্য অতিথি পাখি ছুটে আসে। পুরো শীতকাল অবস্থান করে। পাখির কিচির-মিচির শব্দে আনন্দঘন পরিবেশকে করে তোলে প্রাণবন্ত। আবার শীতের তীব্রতা কিছুটা কমে গেলে পাখিগুলো পূর্বের স্থানে ফিরে যায়। এই পাখির আগমনকে ঘিরে স্থানীয় শিকারীরা মাঠে নেমে মেতে উঠে নিধনের মহোৎসবে।
গতকাল শুক্রবার সরেজমিনে দেখা যায়, বিলগুলোতে পাখির ঝাঁকের নয়নাভিরাম দৃশ্য সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে। এখানে আশ্রয় নিয়েছে শত শত সাদা বক ও পানকৌড়ি। আর কতিপয় মানুষ লাঠি হাতে পাখিগুলোকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে। এই তাড়া খেয়ে জালে ও ফাঁদে পড়লে পাখিগুলোকে খাঁচায় আটকানো হচ্ছে। গাইবান্ধা সদর ও পলাশবাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী নেছরি ও আজরার বিলে এয়ারগান হাতে পাখি শিকার করছে মধ্য বয়সী কয়েকজন ব্যক্তি । এরপর প্রতিবেদক ও স্থানীয়দের চেষ্টায় তারা পাখি শিকার করতে ব্যর্থ হয়।
নামপ্রকাশ না করা শর্তে এক শিকারী বলেন, নিতান্তই শখের বশে পাধি ধরা হয়। এসব পাখি বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। প্রকার ভেদে প্রত্যেক পাখি ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা দামে বিক্রি করা হয়।
বন্যপ্রাণী ও পরিবেশ নিয়ে কাজ করা শিক্ষার্থীদের সংগঠন তীর এর গাইবান্ধা সরকারি কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন জানান, পরিবেশ ভারসাম্য রক্ষায় পাখির গুরুত্ব অপরিসীম। তাই এ সকল পাখি রক্ষায় প্রশাসনসহ স্থানীয়দের এগিয়ে আসা জরুরি। পাখি নিধনের ব্যাপারে জেল-জরিমানার বিধান রয়েছে। প্রশাসনের উচিত বিল বা নদী এলাকায় সচেতনতা বৃদ্ধি করতে লিফলেট বিতরণ করা ।