শুক্রবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৮:৪০ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টারঃ স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও মুজিববর্ষকে স্মরণীয় করে রাখতে গিনিস বুকে নাম লেখাতে নির্ধারিত ২৪ ঘন্টার পূর্বেই মাত্র ২২ ঘন্টায় ১০.৪ কিলোমিটার সড়ক জুড়ে আলপনা আঁকা শেষ করেছে গাইবান্ধার শিক্ষার্থীরা। বিশ্বের দীর্ঘতম আলপনা আকাঁর মধ্য দিয়ে এবার গিনিস ওয়ার্ল্ড বুকে বাংলাদেশের নাম লেখাবার পালা।
বদলে গেছে গাইবান্ধা-সাঘাটা-বাদিয়াখালী সড়ক। সাত রঙে রাঙা পিচঢালা এই পথে চলতে গিয়ে অবাক পথচারীরাও। মাত্র ২২ ঘন্টায় শিক্ষার্থীদের হাতের শৈল্পিক ছোঁয়ায় রং তুলির আঁচড়ে দৃষ্টিনন্দন সড়কটি নজড় কেড়েছে অনেকের। সড়কেই নাওয়া-খাওয়া, সড়কেই বিশ্রাম। এমনিভাবে গত বৃহ¯পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে গোটা রাত পেরিয়ে পরদিন গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে দশটা পর্যন্ত টানা ২২ ঘন্টায় গাইবান্ধা শহর থেকে বাদিয়াখালী পর্যন্ত ১০.৪ কিলোমিটার সড়কে শেষ হয় আলপনা আঁকার কাজ। এবার বিশ্বের বুকে নতুন করে বাংলাদেশকে তুলে ধরার পালা। এই আলপনার মধ্যদিয়ে বাংলাদেশ গিনিস ওয়ার্ল্ড বুকে নাম লেখাবে আশাবাদী গাইবান্ধাবাসি। রেইনবো পেইন্টসের সহযোগীতায় দীর্ঘতম আলপনা উৎসবে ব্যবহার করা হয় ৬ হাজার লিটার রং। এ উৎসবের আয়োজন করে পুসাগ এর সদস্য শিক্ষার্থী।
উল্লেখ্য, জেলা শহরের পুলিশ লাইনের সম্মুখ থেকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি মেডিকেল কলেজ পড়–য়া গাইবান্ধার শিক্ষার্থীদের সংগঠন পাবলিক ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস্ অ্যাসোসিয়েশন অব গাইবান্ধা (পুসাগ) এর শিল্পীরা দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে আলপনা অংকন শুরু করে। শিক্ষার্থীদের রং তুলির আঁচরে আঁচরে গাইবান্ধা-সাঘাটা-বাদিয়াখালী সড়ক জুড়েই সুদৃশ্য বর্ণিল আলপনাটি বিপুল মানুষের উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় যখন সাঘাটার ভাঙ্গামোড়ে গিয়ে পৌছায় তখন আলপনা উৎসবের উদ্বোধন করেন জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার মোঃ ফজলে রাব্বি মিয়া এমপি। এসময় তার সাথে উপস্থিত ছিলেন গাইবান্ধা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আতাউর রহমান সরকার আতা, পুলিশ সুপার মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম। তারাও একপর্যায়ে রং তুলি নিয়ে আলপনা আঁকায় অংশ নেন।
এসময় ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়া বলেন, গাইবান্ধার এই তরুণ শিক্ষার্থীদের উৎসাহ উদ্দীপনা দেখে তিনি অভিভুত। তিনি আশা প্রকাশ করেন, গতকাল শুক্রবার নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই বিশ্বের এই দীর্ঘতম আলপনা অংকনের কাজ সম্পন্ন হয় এবং এটি গিনিস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে বাংলাদেশকে ঠাঁই করে দেবে।
উদ্যোক্তাদের সূত্রে জানা গেছে, ১০ কিলোমিটার সড়ক জুড়ে আলপনা আঁকার সময়সীমা ইতোপূর্বে ২৪ ঘন্টা নির্ধারণ করা হলেও তারা মাত্র ২২ ঘন্টা সময়ে ১০.৪ কিলোমিটার সড়ক জুড়ে আলপানাটি আঁকতে সক্ষম হয়। নির্ধারিত দূরত্বে আলপনাটি আঁকা সম্পন্ন হওয়ার পর সকাল সাড়ে ১০টায় সদর উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন সড়কে ফিতা কেটে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক মোঃ আবদুল মতিন দীর্ঘতম এবং অপরিসীম শ্রমসাধ্য বর্ণিল এই সড়ক আলপনার সমাপনী টানেন। তিনি প্রশংসনীয় কাজের জন্য শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ জানান এবং আশাবাদ ব্যক্ত করেন গিনিস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে বিশ্বের দীর্ঘতম অংকিত সড়ক আলপনা হিসেবে এটি স্বীকৃতি পাবে।
আলপনা উৎসব অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত আয়োজক সংগঠনের সভাপতি হুসেইন মোঃ জীম, সাধারণ সম্পাদক একে প্রামানিক পার্থ, নির্বাহী সভাপতি ডাঃ তন্ময় নন্দী, প্রধান সমন্বয়ক চন্দ্র শেখর চৌহান প্রমুখ।