সোমবার, ২৯ মে ২০২৩, ১২:৩৪ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টারঃ ঘাঘট নদীর নাব্যতা আর গতিপথ ফেরাতে দুই কিলোমিটার পুনঃ খনন কাজ শুরু করেছে রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড। সুন্দরগঞ্জ ও রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার মধ্যবর্তী সিমানা দিয়ে বয়ে চলা ঘাঘট নদীর নাব্যতা ফেরাতে পুনঃ খনন কাজ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে নদীর ৫০ শতাংশ খনন কাজ শেষ করেছে নিয়োগপ্রাপ্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তবে স্থানীয় লোকজনের দাবি জানান, জরুরী ভিত্তিতে জিও বস্তার ডাম্পিং ও ব্লক নির্মাণ করে নদীর তীর ও সেতু রক্ষা করা হোক।
উল্লেখ্য, ঘাঘট নদীর পুনঃ খননের ফলে সম্পূর্ণ ঝুঁকিতে পড়েছে চরকাবাড়ি সেতু। সেতুর নিচ থেকে শ্যালো মেশিনে তৈরি ড্রেজার দিয়ে ভূ-গর্ভস্থ বালু উত্তোলন করায় পিলারে ফাটল দেখা দিয়েছে। এমনকি সেতুর পূর্ব দিকের গাইড ওয়ালের নিচের অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। উপরের গার্ডার ও একটি পিলার দেবে গেছে। এছাড়াও পিলার নিচ থেকে পানির স্রোতে মাটি সরে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। গত বছরের বন্যায় পানির চাপে এমনিতেই ব্রীজের পূর্ব দিকের সংযোগ সড়কটি দেবে গেছে। সে সময় বালুর বস্তা ফেলে ব্রীজ রক্ষার চেষ্টা করে মিঠাপুর এলজিইডি। কিন্তু পূর্ব থেকেই ঝুঁকিতে থাকা চরকাবাড়ি সেতুটির নিচ থেকে বালু উত্তোলনের কারণে এখন আরো বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। ফলে বন্যার সময় ব্রীজ ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসি।
কিন্তু সেতু রক্ষায় কেউ কারো দায় নিতে চাইছে না। পাউবো বলছে, শুধু নদী খনন করা তাদের কাজ। এর বাহিরে কোন প্রকল্প না থাকায় তাদের কিছুই করার নেই। আর এলজিইডি বলছে, নদীর তীর রক্ষার দায়িত্ব পাউবোর। কাজেই ঘাঘট নদীর পুনঃখননের ফলে ঝুঁকিতে থাকা সেতু তাদেরকেই রক্ষা করতে হবে। অনেকটা ঝুঁকিতে থাকা সেতু অরক্ষিত রেখেই দায়সারা খনন কাজ শেষ করতে চাইছে পাউবো ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এমন দায়সারা দায়িত্বে সেতু ও খননের পর নির্মিত নদীর তীর দুটোই হুমকির মুখে পড়েছে। এছাড়াও আশপাশের গ্রাম ও ফসলি জমি রক্ষা করা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, ১৯৯৮-৯৯ অর্থ বছরে ঘাঘট নদীর উপর চরকাবাড়ি সেতুটি নির্মাণ করা হয়। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল দপ্তরের অর্থায়নে ৭০ মিটার সেতুটি নির্মাণ করেন রংপুর এলজিইডি। প্রায় এক কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুর উদ্বোধন করেন তৎকালীন বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী এনএইচ আশিকুর রহমান। ২০০০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের মধ্যে দিয়ে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ ও রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে সেতুটি। সেতুটি দিয়ে দুই উপজেলার প্রায় লাখো মানুষ চলাচল করে। এছাড়াও আশপাশের কলেজ ও স্কুলে দুপারের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে আসেন। সেতুটি ক্ষতিগ্রস্থ হলে দুই উপজেলার মানুষের সাথে সরাসরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। এতে একদিকে যেমন বাড়বে দুর্ভোগ অন্যদিক ব্যবসায়িক ক্ষতিগ্রস্থ হবেন অনেকে।