শনিবার, ১০ জুন ২০২৩, ০৮:৩৭ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টারঃ সুন্দরগঞ্জে ড্রেনের নোংরা পানি ও বর্জ্য দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে উপজেলা পশু হাসপাতালের উঠান। বর্জ্যরে সৃষ্ট দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন পথচারী ও প্রাণীর চিকিৎসা নিতে আসা জনসাধারণ। সেই সাথে দুর্গন্ধের সঙ্গে লড়াই করে বসবাস করছেন হাসপাতালের চারদিকে বসবাসরত মানুষজন।
গত বৃহস্পতিবার দপুরে সরেজমিনে কথা হয় মুরগীর ভ্যাকসিন নিতে আসা শিক্ষক মোজাম্মেল হকের সাথে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ভ্যাকসিন নিতে এসেছিলাম। সঙ্গে মেয়ে ছিলো। দুর্গন্ধে সে ঢুকতেই পারেনি। পরে মেয়েকে বাহিরে রেখে নাক-মুখ চেপে ধরে একাই ঢুকি অফিসে। স্যার বললেন মুরগীর ভ্যাকসিন শেষ। এর আগেও কয়েকবার ভ্যাকমিন নিতে এসেছিলাম। একই কথা বলেছেন উনি।
বর্জ্যরে বিষয়ে ক্ষোভ তাঁর একার না। প্রাণীর চিকিৎসা নিতে আসা সবার। কথা হয় রেজাউল করিমের সাথে। তিনি এসেছেন ছাগলের চিকিৎসা নিতে। বাড়ি তাঁর বেলকা ইউনিয়নে। তিনিও আক্ষেপ করে বলেন, একদম বাজে দুর্গন্ধ। এখানে চিকিৎসা নেয়ার কোনো পরিবেশ নেই।
হাসপাতাল ঘেষে বসবাসরত প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা পুষ্টি সমন্বয় কমিটির সদস্য একেএম মিজানুর রহমান স্বপন বলেন, এতে মারাত্নকভাবে পরিবেশের দূষণ ঘটছে। দুর্গন্ধযুক্ত ময়লাতে প্রতিনিয়ত বসতেছে মশা-মাছি। সেগুলো আবার বাসাবাড়িতে গিয়ে রান্না করা খাবারে বসতেছে। সে কারণে বিস্তার ঘটছে নানা ধরণের রোগ জীবাণু। এতে এলাকায় নানা বয়সী মানুষের মধ্যে চর্ম ও নানা ধরনের পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিতে পারে বলেও মনে করেন এই প্রধান শিক্ষক।
হাসপাতালের পাশে বসবাসরত অপর এক নারী কল্পনা রানী বলেন, ‘যেদিন এখানে ময়লাগুলো ফেলানো হয়েছে। সেদিন থেকে কয়েকদিন খুব কষ্ট করে বাসায় ছিলাম। বিশেষ করে ভাত খেতে খুবই সমস্যা হচ্ছিল। পরে মন্দিরে গিয়ে গিয়ে ভাত খেয়ে এসেছি।
ময়লা থেকে ২০ গজ দুরে ঔষধ ব্যবসায়ী সুপ্ত কুমার সরকার বলেন, নিয়মিত ব্যবসা কেন্দ্রে বসতেছি না। বসলেও আগরবাতি জ্বালিয়ে ব্যবসা করছি। দুগর্ন্ধে থাকা যাচ্ছে না এখানে। ক্রেতাও কম আসছে।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মোঃ ফজলুল করিম বলেন, অফিস ঘেঁষে গর্ত। বৃষ্টি হলেই পানি জমবে এখানে। সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে যাওয়াসহ নানা সমস্যা হতে পারে। সে কারণে ভরাট করা জরুরী ছিলো। মাটিও পাচ্ছিলাম না কোথায়ও। সে কারণে এটি করা হয়েছে। তাছাড়া এগুলো সরাসরি বর্জ্য না বলেও জানান তিনি। তারপরেও এখানে বিলিসিং পাউডার ছিটানো হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ-আল-মারুফ বলেন, পশু হাসপাতালে ড্রেনের নোংরা পানি ও বর্জ্য ফেলানোর ব্যাপারে আমার করার কিছু নেই। এটি তাঁদের ব্যাপার। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হাসপাতালের আশপাশের কেউ অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
পৌর মেয়র মোঃ আব্দুর রশিদ রশীদ রেজা সরকার ডাবলু বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। এটি করে থাকলে পশু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঠিক করেননি। তিনি আরও বলেন, ড্রেনের যে নোংরা পানি ও বর্জ্য ড্রেনে রাখা সম্ভব হচ্ছে না সেটি আবার সরকারি অফিসের সামনে। এটি অত্যান্ত দুঃজনক কাজ।