সোমবার, ২৭ মার্চ ২০২৩, ০৬:২৮ পূর্বাহ্ন
সাদুল্লাপুর প্রতিনিধিঃ অতিদরিদ্র পরিবারের কিশোরী (১৭)। হঠাৎ হয়েছে অন্তসত্তা। কিছুদিন পরেই পৃথিবীর আলো দেখবে গর্ভের সন্তানটি। কিন্তু কে এই সন্তানের পিতা? এটি সবার জানা থাকলেও সেটি নিশ্চিত করছে কেউ। এখন গর্ভের সন্তানের পিতার পরিচয় নিয়ে দুশ্চিন্তায় কিশোরীটি।
সরেজমিনে গতকাল সাদুল্লাপুর উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের মহেশপুর (কৃষ্ণপুর) গ্রামে দেখা যায়, অন্তসত্তা ওই কিশোরীর চোখেমুখে হতাশা ও কলঙ্কের গ্লানি। এ ঘটনার বিচার চেয়ে সমাজপতিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোনো সমাধা পায়নি। বাধ্য হয়ে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কিশোরী ও তার পরিবারটি।
মামলার বিবরণে জানা যায়, মহেশপুর (কৃষ্ণপুর) গ্রামের বাদল সরকারের ছেলে সৌরভ সরকার (১৯) এর দ্বারা প্রভাবিত হয়ে একই গ্রামের মৃত জনৈকের মেয়ে (১৭) এর প্রেম-ভালোবাসা গড়ে উঠে। এরপর প্রেমিক সৌরভ বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে কিশোরীর ইচ্ছের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে দৈহিক মিলনে লিপ্ত হয়।
ধারাবাহিকতায় কিশোরীকে বিয়ে করবে মর্মে ঢাকাসহ বিভিন্ন আতœীয়-স্বজনের বাড়িতে নিয়ে প্রায় একমাস দৈহিক মিলন করে সৌরভ। এরপর নানা কৌশলে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয় কিশোরীকে। এরই মধ্যে মাথা ঘোরা ও বমি বমি ভাব হলে গত ৫ সেপ্টেম্বর কিশোরীকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী ৩১ সপ্তাহ ধরে অন্তসত্তা হয়েছে বলে জানান কর্তব্যরত চিকিৎসক। এমতাবস্থায় প্রেমিক সৌরভকে বিয়ের কথা বলা হলে অস্বীকৃতি জানায় সে। বাধ্য হয়ে বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত-২ গাইবান্ধায় মামলা দায়ের করেছে অন্তসত্তা কিশোরী।
এসব তথ্য নিশ্চিত করে ওই কিশোরী জানান, বিয়ের প্রলোভন দিয়ে একাধিকবার যৌন মিলনে লিপ্ত হয় সৌরভ সরকার। এখন প্রায় ৯ মাসের অন্তসত্তা সে। কিন্তু বিয়ের কথা বলা হলে, সেটি মেনে নিচ্ছেনা তার পরিবার। এমনকি সৌরভও গা ঢাকা দিয়েছে। এ বিষয়ে গ্রামের মানুষের কাছে বিচার চাওয়া হলে সেটির সমাধায় আসেনি সৌরভের পরিবারের। উল্টো মিথ্যা কলঙ্ক জাহির করছে তারা।
কিশোরী আরও বলে, অন্তসত্তা হওয়ার প্রায় ৯ মাস চলেছে। আর কিছুদিন পরই ভুমিষ্ট হবে গর্ভের সন্তান। এখন কে হবে এই সন্তানের পিতা? সেটির বিচার চাই।
এদিকে, নাম প্রকাশ না করা শর্তে স্থানীয় অনেকে জানান, কিশোরীর ঘটনাটি ঠিক। কিন্তু সৌরভের পরিবারটি প্রভাবশালী হওয়া কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না।
তবে এসব ঘটনা অস্বীকার করে সৌরভের পিতা বাদল সরকার বলেন, আমার ছেলেকে ফাঁসানোর জন্য মিথ্যা অপবাদ দিয়ে মামলা দায়ের করেছে। মেয়েটির চরিত্র অনেকটাই খারাপ। বিভিন্ন ছেলেকে দেহ দিয়ে থাকে। সেটি এখন আমাদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে ফরিদপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য সুজন সরকার জানান, সৃষ্ট ঘটনাটি সমাধনের জন্য একাধিকবার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু সেটি সমাধা করা সম্ভব হয়নি। এখন আদালতেই রায় দিবেন, ওই কিশোরীর কাজে কে দোষী।