শুক্রবার, ৩১ মার্চ ২০২৩, ০৯:৩৭ পূর্বাহ্ন
সাদুল্লাপুর প্রতিনিধিঃ সাদুল্লাপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের দুই গ্রুপ একই সময়ে পাশাপাশি স্থানে দলীয় সভা আহবান করায় স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। ফলে কোন গ্রুপই তাদের নির্ধারিত স্থানে দলীয় সভা করতে পারেনি। পরে বেশ কিছুটা দূরত্বে গিয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের এক গ্রুপ সভা করেছে। সভা শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ জাকারিয়া খন্দকারকে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়ার ঘোষনা দেওয়া হয়েছে। এদিকে ১৪৪ ধারা জারীর কারনে দিনভর শহরের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে। ভোগান্তিতে পরেন সাধারণ মানুষজন।
জানা যায়, সাদুল্লাপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যক্ষ জাকারিয়া খন্দকার ও সাধারণ সম্পাদক সাহারিয়া খাঁন বিপ্লব পৃথক ভাবে গতকাল রোববার সকাল ১০ টায় দলীয় সভা আহবান করেন। উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সভা ডেকেছেন দলীয় কার্যালয়ে (শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্ত্বরে) আর সাধারণ সম্পাদক সভা ডেকেছেন শহরের পাবলিক লাইব্রেরী এন্ড ক্লাবে। একই দিন একই সময়ে দলীয় সভা আহবানকে কেন্দ্র করে হাঙ্গামা বাঁধতে পারে বলে পুলিশ ধারণা করে। তাই এটি কেন্দ্র করে যেকোন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে স্থানীয় প্রশাসন সর্তক অবস্থান নেয়। নিজেদের মধ্যে আভ্যন্তরীন দ্বন্দ্বে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে দলের ত্যাগী নেতাকর্মী এবং সচেতন মহলের সবাই ধারণা করছেন। আওয়ামীলীগের দুই গ্রুপের পৃথক দলীয় সভা আহবানের জল্পনা কল্পনার মধ্যেই গত শনিবার রাত ১১ টার দিকে সাদুল্লাপুর শহরে ১৪৪ ধারা জারীর ঘোষনা দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ নবীনেওয়াজ। গত শনিবার রাতে এবং রোববার সকাল থেকে সাদুল্লাপুর শহরে চলে এই আইন বলবদে প্রচারণার মাইক। তিনি রাতে লিখিতভাবে একটি ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১৪৪ ধারা বিজ্ঞপ্তিও জারি করেন। এটি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ নবীনেওয়াজ।
এদিকে সাদুল্লাপুর শহরে ১৪৪ ধারা আইন জারি থাকায় উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সাহারিয়া খাঁন বিপ্লবের আহবানকৃত সভাটি সাদুল্লাপুর পশ্চিমপাড়ার তালতলায় নেওয়া হয়। সেখানে উপজেলা আওয়ামীলীগের কার্যনির্বাহী কমিটির ৭১ সদস্যের মধ্যে ৪৮ জন সদস্যের উপস্থিতিতে দলীয় সভা হয়েছে বলেন জানান যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক এস.টি.এম রুহুল আলম।
এই গ্রুপের দলীয় সভার পর সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সাহারিয়া খাঁন বিপ্লব বলেন, দ্বন্দ্ব এড়াতে আমরা দূরে এসে সভা করেছি। আর এই সভা থেকে দলের মধ্যে দ্বন্দ্ব-বিভেদ সৃষ্টিকারী উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ জাকারিয়া খন্দকারকে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সিন্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এমনকি দল থেকে তার প্রাথমিক সদস্য পদ বাতিলের জন্য আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিকে লিখিত ভাবে জানানো হবে।
এই বিষয়ে বক্তব্য জানতে উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যক্ষ জাকারিয়া খন্দকারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তাঁর মোবাইল ফোনে কল করেও সেটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
সাদুল্লাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাসুদ রানা জানান, আওয়ামীলীগের দুই পক্ষের একই দিনে একই সময়ে দলীয় সভা আহবানকে কেন্দ্র করে শহরে ১৪৪ ধারা আইন জারি করা হয়। এর সঙ্গে সকাল থেকেই শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। দলীয় কার্যালয়সহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে পুলিশ সর্তক অবস্থানে থাকায় কোথাও কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।