সোমবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৬:৪৯ অপরাহ্ন
ভ্রামমান প্রতিনিধিঃ এ বছর বস্তায় আদা চাষ করে লাভের আশা করছেন সাঘাটা উপজেলার কৃষকরা। বাড়ির পার্শ্বে পতিত জমি কিংবা অন্য ফসলের পাশে সাথি ফসল হিসেবে আদা চাষে কম খরচ ও বেশি লাভ হওয়ায় উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শে বস্তায় আদা চাষে স্থানীয় কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে। এতে কৃষকদের লাভবান হওয়ার পাশাপাশি। আমদানি নির্ভরতা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
জানাযায়, আদা বাংলাদেশে একটি গুরুত্বপূর্ণ মসলা জাতীয় ফসল। বাংলাদেশে ১৭ হাজার হেক্টর জমিতে ২.৮৮ লক্ষ মেট্রিক টন আদা উৎপাদিত হয়। যা দেশের চাহিদার ৪.৮১ লক্ষ মেট্রিক টন এর তুলনায় খুবই নগন্য। আদার গড় ফলন ১১.২৮ টন/হেক্টর। এই ঘাটতি পুরণের লক্ষ্যে বাংলাদেশের কৃষি বিজ্ঞানীগণ বারি আদা-১, বারি আদা-২, ও বারি আদা-৩ নামে তিনটি উচ্চ ফলনশীল জাত উদ্ভাবন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী মসলার উন্নত জাত ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রকল্পের অধীনে, গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার ভরতখালী ইউনিয়নের চিথুলিয়া গ্রামের কৃষক আব্দুল হালিম পতিত দুই শতাংশ জমিতে এপ্রিল মাসে ৫০০ বস্তা আদা চাষ করেছেন। পরিমাণ মতো মাটি, গোবর সার মিশ্রণ করে, বালির বস্তায় আদা চাষে খরচ প্রতি বস্তায় ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। বর্তমান বাজার মূল্যে প্রতি কেজি আদা ৩০০ টাকা। এতে দুই শতাংশ জমি থেকে এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা পাবেন বলে আশা করছেন তিনি। এক বিঘায় আদা বিক্রয়ে সাড়ে ২৪ লক্ষ টাকা পাওয়া যাবে । সীমিত খরচ, কম জায়গা আর অল্প শ্রমে বস্তায় আদা চাষ করা যায়। আদা গাছে পানির চাহিদা অনেক কম। সার বা কীটনাশক ব্যবহার করতে হয় সীমিত। মাঝেমধ্যে পাতামরা রোগ প্রতিরোধে কিছু ওষুধ স্প্রে করতে হয়। এর বাইরে তেমন পরিচর্যা লাগে না। রোগবালাই নেই বললেই চলে প্রয়োজনে আক্রান্ত গাছ সরিয়ে নিলে অন্যান্য গাছ আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। বস্তা সহজে বহন করার ফলে বন্যায় ক্ষতি হয়না, কম খরচে অধিক লাভ হওয়ায়। এজন্য কৃষকরা বস্তায় আদা চাষের দিকে ঝুঁকে পড়েছেন। কৃষকদের আদা চাষে উদ্বুদ্ধ সহ বাড়ি বাড়ি গিয়ে সব ধরনের সহায়তা দিচ্ছেন সাঘাটা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। উদ্বুদ্ধ কৃষক, মোঃ রবিউল ইসলাম বলেন, এবারে আদার ফলন ভালো হয়েছে। আগামীতে আমি আবাদ করবো। চাষি কৃষক, আব্দুল হালিম বলেন, কৃষি অফিসারের পরামর্শে ৫০০ বস্তায় আদা চাষ করেছি, আগামী বছরের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। বেশি জমিতে আবাদ করব।
সাঘাটা উপসহকারী কৃষি অফিসার মোঃ ফরিদুল ইসলাম বলেন, সব সময় পরামর্শ দিচ্ছি, কৃষকরা সেই মোতাবেক আবাদ করছেন।
সাঘাটা উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ সাদেকুজ্জামান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী, মসলার উন্নত জাত ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রকল্পের অধীনে বস্তায় আদা চাষের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।