মঙ্গলবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৯:৩৫ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টারঃ করোনার কারনে দেশের সকল শিক্ষার্থীদের দেওয়া হবে আর্থিক অনুদান এমন গুজবে গত শনিবার ৬ মার্চ ও ৭ মার্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে প্রত্যয়ন পত্রের জন্য ভিড় জমায় শিক্ষার্থীরা । বিপুল সংখ্যক এসব শিক্ষার্থীর চাপ সামাল দিতে রিতিমত হিমশিম খেতে হয় ঐসব স্কুল- কলেজের অধ্যক্ষ থেকে শুরু করে অন্যান্য শিক্ষক ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের । সরকারের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের নগদ আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে এমন একটি ভুয়া বিজ্ঞপ্তি গত ৪ মার্চ রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করা হয় এবং মুহূর্তের মধ্যে তা ভাইরাল হয়ে যায় । এরপর গত শনিবার সকাল থেকে শুরু হয় গনহারে আবেদন ।
জানা যায়, শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষক কর্মচারী ও ছাত্রছাত্রীদের জন্য বিশেষ অনুদান প্রদানের বর্ধিত সূচি প্রকাশের পর কিছু স্বার্থান্বেষী মহল অপপ্রচার চালিয়ে গুজব ছড়িয়েছে। সরকার করোনার জন্য শিক্ষার্থীদের ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার করে টাকা দিবে আর শিক্ষার্থীরা এই গুজবে কান দিয়ে আবেদনের জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রত্যয়ন পত্রের জন্য ছুটাছুটি করছে। যারাই এই গুজব শুনেছে তারা সবাই এটা বিশ্বাস করে অনলাইনে আবেদন করছে।
গত ১৮ জানুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত ঐ বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, বিভিন্ন স্কুল-কলেজ, শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের মাঝে ২০২০-২০২১ অর্থবছরের রাজস্ব বাজেটের বিশেষ মঞ্জুরির অনুদানের টাকা বিতরণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষকদের এ টাকা পেতে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে অনলাইনে আবেদন শুরু হয়েছিল। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অনলাইনে আবেদনের সময় দেয়া হলেও সে সময় বাড়ানো হয়। এবং ৭ মার্চের মধ্যে বিশেষ মঞ্জুরির অনুদানের টাকা পেতে আবেদন করতে হবে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে। এজন্য ২০২০-২০২১ অর্থবছরের বিভিন্ন স্কুল-কলেজ, শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের মাঝে বিশেষ মঞ্জুরির টাকা বিতরণে ইতোমধ্যে নীতিমালা জারি করা হয়। এ নীতিমালা অনুযায়ী শিক্ষক শিক্ষার্থীদের বিশেষ মঞ্জুরীর টাকা পেতে আবেদন করার নির্দেশ দেওয়া হয় । সরকারি এবং বেসরকারি এমপিওভুক্ত ও ননএমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা দুরারোগ্য ব্যাধির চিকিৎসা, দৈব দুর্ঘটনা এবং চিকিৎসার খরচের জন্য বিশেষ মঞ্জুরির অনুদান প্রাপ্তির আবেদন করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী, অসহায়, অস্বচ্ছল ও মেধাবী, অনাগ্রসর সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীরা অগ্রধিকার দেওয়ার বিষয়টি ঐ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
মূলত দরিদ্র ও শারীরিক ভাবে অসুস্থ শিক্ষার্থীদের আবেদন করতে বলা হলেও বিষয়টি নিয়ে গুজব ছড়িয়ে যাওয়ায় সকলে আবেদন করেছেন । গাইবান্ধা সরকারি কলেজ সূত্রে জানা যায় গত ৬ মার্চ শনিবার তারা ১ হাজার ৩ শত ৭৬ জন শিক্ষার্থীকে প্রত্যয়ন পত্র দেন । এমনকি পরদিন রবিবার ৭ মার্চ প্রত্যয়নপত্রের জন্য বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী একাডেমিক ভবনে ভিড় করে । কলেজ ও স্কুল থেকে প্রত্যয়ন পত্র সংগ্রহের পর শিক্ষার্থীর ভিড় করে শহরের বিভিন্ন কম্পিউটারের দোকানে। এমনকি দোকানে জায়গা কম থাকায় শিক্ষার্থীদের লাইন রাস্তা পর্যন্ত আসায় শহর জুড়ে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গাইবান্ধা সরকারি কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর খলিলুর রহমান জানান, গুজবে কান দিয়ে শিক্ষিত ছেলেমেয়েদের এমন আচরণ খুব হতাশার ।