শুক্রবার, ৩১ মার্চ ২০২৩, ০৮:০৭ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম
শিক্ষা ব্যাবস্থা উন্নত আধুনিক ও শিক্ষার মান উন্নয়নের কৃতিত্ব একমাত্র প্রধানমন্ত্রীর -মাহমুদ হাসান রিপন এমপি সুন্দরগঞ্জে সাব প্রাণী সম্পদ কল্যাণ কেন্দ্রের বেহালদশাঃ গ্রাম গঞ্জে পশু ডাক্তারের নামে হাতুড়ে ডাক্তারের ছড়াছড়ি গাইবান্ধায় আওয়ামীলীগের ঐতিহাসিক ৭ ই মার্চ উদযাপন সাঘাটায় রেকর্ডভুক্ত জমিতে ব্রীজ নিমার্ণ কাজে বাধাঁ প্রদান করায় ঠিকাদার কর্তৃক থানায় অভিযোগ কলেজপাড়ায় পৌর নাগরিকদের সভা নলডাঙ্গায় নবীন ও বসন্ত বরণ অনুষ্ঠান গাইবান্ধায় স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে মতবিনিময় সভা গাইবান্ধায় মহিলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন গোবিন্দগঞ্জে সরকারি বই বিক্রিকালে জনতার হাতে শিক্ষক-কর্মচারী আটক দারিয়াপুরে বাম জোটের সমাবেশ অনুষ্ঠিত

শহরের মার্কেট গুলোতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়ঃ স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করেই চলেছে ঈদ কেনাকাটা

শহরের মার্কেট গুলোতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়ঃ স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করেই চলেছে ঈদ কেনাকাটা

স্টাফ রিপোর্টারঃ করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁঁকির মধ্যেই সারাদেশের মতো গাইবান্ধাতেও খুলে দেয়া হয়েছে বিপণী বিতান, মার্কেট ও দোকানপাট। আসন্ন ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে তাই এসব স্থানে জমে উঠেছে কেনাকাটা। বৈশাখের প্রখর তাপ উপেক্ষা করে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দোকানগুলোতে ভিড় জমেছে। কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন মার্কেটে আসা ক্রেতারা। কিন্তু সরকারের বেঁধে দেয়া বিধিনিষেধ মেনে মার্কেট খোলার কথা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। এখনো সুরক্ষার ব্যবস্থা নেয়া হয়নি অনেক মার্কেটে। বিগত সময়ের তুলনায় মাস্ক পরার প্রবণতা বাড়লেও সামাজিক দূরত্ব মানতে উদাসীন ক্রেতা-বিক্রেতারা।
গতকাল গাইবান্ধা শহরের বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, কোথাও মানা হচ্ছে না করোনাকালীন স্বাস্থ্যবিধি। অনেক মার্কেটের প্রবেশদ্বারে রাখা হয়নি জীবাণুনাশক টানেল ও হাত ধোয়ার ব্যবস্থা। বিপণী বিতানগুলোতে নেই হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবহার। দোকানিদের মুখে নেই মাস্ক। আবার কেউ কেউ হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার না করেই নাক মুখে হাত দিচ্ছেন। প্রায় প্রতিটি দোকানে ভিড়। চলছে দরকষাকষি। করোনার সংক্রমণ ঝুঁকির মধ্যে বড়দের সঙ্গে ভিড় করছেন ছোট শিশুরাও। শিশুদেরকে পোশাক ট্রায়াল দিতেও দেখা গেছে। একই পোশাক ট্রায়াল দিচ্ছেন একাধিক শিশু। এতে যেকোনো সময় করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন তারা। মাস্ক না পড়েই কেনাকাটা করতে দেখা গেছে অনেককে। ক্রেতারা এক দোকান থেকে যাচ্ছেন অন্য দোকানে। রক্ষা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্বও। দোকানিরা বলছেন, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর মার্কেট খুলছেন তারা। ঈদের আর মাত্র কয়েকদিন বাকি তাই দোকানে ভিড় বাড়তে শুরু করেছে । তাই স্বাস্থ্যবিধি পুরোপুরি মেনে দোকান খোলা রাখা সম্ভব হবে না। তাই যে যেভাবে পারছেন স্বাস্থ্যবিধি ও সরকারের বিধিনিষেধের তোয়াক্কা না করেই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছেন। মিজান নামের এক বিক্রেতা জানান, এখনো ঈদের বাজার জমে উঠেছে। তীব্র গরম আর রোজার কারণে ক্রেতা দিনের বেলায় আসতে চায় না। বিকালের পর ক্রেতাদের উপস্থিতি আরো বাড়ে। তবে মার্কেটের অধিকাংশ দোকানি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে নারাজ। একই দোকানে একাধিক লোক একসঙ্গে ভিড় করেন। জিনিসপত্র নেড়েচেড়ে দেখেন। আবার একই জিনিস একাধিক লোকের স্পর্শ করতে হয়। এতে করে স্বাস্থ্যবিধি রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়ে। এতে করে আমরা ব্যবসায়ীরা করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছি। কি করবো একদিকে জীবন, আবার অন্যদিকে জীবিকা। সামনে ঈদ। তাই বাধ্য হয়েই ঝুঁকি নিয়ে বেচাবিক্রি করি।
গাইবান্ধার দক্ষিণ ধানঘড়া এলাকা থেকে শপিং করতে এসেছেন সুলতানা রাজিয়া। তার সঙ্গে ৪ বছরের শিশু শিমুল। সুলতানা বলেন, দীর্ঘদিন মার্কেট বন্ধ থাকায় শপিং করা হয়নি। তাই আজ তীব্র গরমের মধ্যে শপিং করতে আসলাম, ভেবেছি লোকজন কম হবে। এখন দেখছি ক্রেতাদের ভিড়। তবে স্বাস্থ্যবিধি নেই। আমি মানলেও পাশের লোকজন তা মানছেন না। কোনো দোকান খালি নেই। সবখানেই একাধিক লোকের উপস্থিতি রয়েছে। একই পণ্য সবাই খালি হাত দিয়ে ধরে দেখছেন। ক্রেতারা স্বাস্থ্যবিধি না মানলেও দোকানিরা তাদের কাছে বিক্রি করছেন। নো মাস্ক নো সার্ভিসের কোনো বাস্তবায়ন নেই। এভাবে চলতে থাকলে করোনার সংক্রমণ আরো বেশি ছড়াতে পারে। মার্কেট কর্তৃপক্ষও স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে উদাসীন।
এদিকে, স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না শহরের অভিজাত মার্কেট গুলোতেও । মার্কেটের প্রবেশদ্বারে স্বাস্থ্যবিধি কড়াকড়ি হলেও ভিতরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে অনীহা দেখাচ্ছেন ক্রেতা ও বিক্রেতাগণ। স্বাস্থ্যবিধি মানতে হ্যান্ডমাইক নিয়ে ঘুরে ঘুরে প্রচার করলেও তা কাজে আসছে না। সরজমিন দেখা যায় মার্কেটের প্রবেশ মুখে মাস্ক পড়ে প্রবেশ করাচ্ছেন নিরাপত্তা কর্মীরা । ভেতরে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে অনেকেই মাস্ক খুলে রাখছেন। কেউ কেউ মাস্ক থুতনিতে ঝুলাচ্ছেন। অনেকেই দলবদ্ধ হয়ে ঘোরাঘুরি করছেন। অধিকাংশ দোকানে রয়েছে ক্রেতার সমাগম। একসঙ্গে ভিড় করছেন একাধিক ক্রেতা। কোনো কোনো দোকানির মুখে নেই মাস্ক। দরকষাকষি করছেন ক্রেতাদের সঙ্গে। জান্নাতুল নাঈম রিয়া নামের এক নারী বলেন, বাহিরে তীব্র গরম। নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। তাই ভেতরে ঢুকে একটু বিশ্রাম নিতে মাস্ক খুলে রাখছি। তিনি বলেন, মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক এটা জানি। তবে সবসময় মাস্ক আর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা সম্ভব হচ্ছে না। নামী দামি বিপণী বিতাণগুলোতেও স্বাস্থ্যবিধি ঢিলেঢালাভাবে চলছে। এসব স্থানে আইন কড়াকড়ি হলে আমিও মাস্ক খুলে রাখতাম না। আইনের ঘাটতি আছে বলেই স্বাস্থ্যবিধি পুরোপুরি মানছেন না ক্রেতা ও বিক্রেতারাও।
জনস্বাস্থ্যবিদরা বলছেন, সরকার শর্ত দিয়ে দোকানপাট ও শপিংমল খুলে দিলেও রক্ষণাবেক্ষণের ঘাটতি রয়েছে। সেসব স্থানে যথেষ্ট আইন প্রয়োগ করা হচ্ছে না।
সুনির্দিষ্ট করে কাউকে দায়িত্ব দিয়ে দোকানপাট খুলে দিলে এমনটি হতো না। এখন যেকোনো সময় যে কেউ করোনায় আক্রান্ত হতে পারে। শপিং করতে এসে ভাইরাস বহনও করতে পারে। তাই মার্কেট ও শপিংমলে স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে সরকারকে আরো কঠোর হতে হবে। এছাড়া ক্রেতাদের মধ্যেও সচেতনতা বাড়াতে হবে। এছাড়া যারা বিধিনিষেধ মানবেন না তাদেরকে আইনের আওতায় আনতে হবে। প্রয়োজনে জেল-জরিমানা করতে হবে।
এ বিষয়ে গাইবান্ধা ইসলাম প্লাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ রনি সরকার জানান, আমরা মার্কেটে প্রবেশ দ্বারে ক্রেতাদের হাতে জীবাণু নাশক স্প্রে করছি সেই সাথে শরীরের তাপমাত্রা মাপার ব্যবস্থা করেছি । অনেক ক্রেতা আছেন যারা নিজেরাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে নারাজ । কিন্তু আমরা ব্যবসায়ীরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে বেচাকেনা করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি ।

নিউজটি শেয়ান করুন

© All Rights Reserved © 2019
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com