মঙ্গলবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৯:২৪ অপরাহ্ন

যমুনার ভাঙনে ঘরবাড়ি বিলিন হুমকিতে বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ

যমুনার ভাঙনে ঘরবাড়ি বিলিন হুমকিতে বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ

স্টাফ রিপোর্টারঃ সাঘাটা উপজেলার যমুনা নদীর মুন্সিরহাট পয়েন্টে ভয়াবহ ভাঙন শুরু হয়েছে। গত ২ দিনের ব্যবধানে মুন্সিরহাটের ৯টি দোকানঘর ও হাটের আশপাশে এলাকার ৫২টি পরিবারের ঘরবাড়ি বিলিন হয়ে গেছে। মারাত্মক হুমকীতে পড়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, জামে মসজিদ, মাদ্রাসা, মুন্সিরহাট বন্যা নিয়ন্ত্রণবাঁধ শতশত ঘর-বাড়ি, অসংখ্য গাছপালা ও আবাদি জমি।
গতকাল বুধবার দেখা গেছে ভয়াবহ ভাঙনের চিত্র। সেখানে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ড বালুভর্তি জিও ব্যাগ ডাম্পিং করে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করছে। তবে এলাকাবাসির অভিযোগ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কমকর্তাদের গাফিলতির কারণে ভাঙ্গন রোধ হচ্ছে না। ফলে এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
জানা যায়, মুন্সিরহাট পয়েন্টে প্রতিবছর একাধিকবার ভাঙন শুরু হলে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ড তড়িঘড়ি করে লাখ লাখ টাকার বালুর বস্তা ডাম্পিং করে জরুরি ভিত্তিতে ঠেকানোর চেষ্টা করা হলেও তা কোনো কাজেই আসছে না। এ নদীর তীর রক্ষা কাজের মুন্সিরহাট ক্রসবাঁধ পয়েন্টে গত ১ মাস আগেই তীব্র ভাঙনে বেশ কয়টি ঘরবাড়ি বিলিন হয়েছে। আবারও গত রোববার রাত থেকে মুন্সিরহাট পয়েন্টে প্রায় ৩ শত ফুট এলাকা জুঁড়ে ভাঙন ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। এরই মধ্যে হাটের ৯টি দোকানঘর, ৫২ টি পরিবারের ঘর-বাড়ি সহ বসতভিটা,অসংখ্য গাছপালা নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। ভাঙন কবল থেকে লোকজন নিজেদের দোকানপাঠ ও ঘর-বাড়ি সরিয়ে নিতে ব্যস্ত রয়েছে। এছাড়াও মারাত্মক হুমকিতে রয়েছে মুন্সিরহাটের শতাধিক দোকানঘর,শত শত ঘরবাড়ি মুন্সিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়,সরকারী প্রথমিক বিদ্যালয়, মুন্সিরহাট জামে মসজিদ, মাদ্রাসা ও বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ। ভাঙনে গৃহহারা পরিবার গুলো মুন্সিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ে, সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়ে ও বিদ্যালয় মাঠে আশ্রয় নিয়ে তারা পরিবার পরিজনসহ মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
গৃহহারা আজাদুল, ইবনে সাঈদ দৌলত, আমিনুর, মিঠু বলেন, এখন আমরা কোথায় আশ্রয় নিই কি খাই। বাড়ি গেলো দোকানঘরও গেলো। হঠাৎ করে রাতে ভাঙন শুরু হয়, সে সময় কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই মুহুর্তের মধ্যে আমাদের সমস্ত জিনিসপত্র, টাকা-পয়সা ঘর-বাড়ি, বসতভিটা সহ বিলিন হয়ে যায়, যা গতকাল বুধবার পর্যন্ত ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। ওই মুহুর্তে স্ত্রী-সন্তান সহ কোনরকমে জীবন নিয়ে ঘর থেকে বের হওয়া ছাড়া কোনো উপায় ছিলো না তাদের ।
সাঘাটা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন সুইট জানান, মুন্সির হাট হতে গোবিন্দি পর্যন্ত এলাকায় যমুনার রক্ষার জন্য স্থানীয় এমপি মাহমুদ হাসান রিপনের প্রচেষ্টায় ২০৬ কোটি টাকা বরাদ্দ এবং কাজের টেন্ডার হয়েছে । বর্ষা মৌসুম শেষে ওই নতুন প্রকল্পের কাজ শুরু হবে।
গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হক বলেন, ভাঙন প্রতিরোধের ক্ষেত্রে কারো কোনো গাফিলতি নেই। মুন্সিরহাট পয়েন্টের ভাঙন সর্বক্ষণ মনিটরিং করে সেখানে জরুরি ভিত্তিতে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা হচ্ছে।

নিউজটি শেয়ান করুন

© All Rights Reserved © 2019
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com