সোমবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৭:৪৪ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টারঃ সাদুল্লাপুরে ছেলের প্রেমের অপরাধে রিকশাচালক ছকু মিয়াকে হত্যার অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলার পর আদালতের নির্দেশে কবর থেকে লাশ উত্তোলন করা হয়েছে।
আদালতের নির্দেশে ময়নাতদন্তের জন্য দাফনের ১৮ দিন পর গতকাল দুপুরে সাদুল্লাপুর উপজেলার দামোদরপুর ইউনিয়নের পূর্ব দামোদরপুর গ্রামের পারিবারিক কবরস্থান থেকে তার লাশ উত্তোলন করা হয়। এসময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট লোকমান হোসেন ও সাদুল্লাপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জুয়েল হোসেন, এসআই মোঃ ইমরান হোসেন ও এএসআই তরিকুল ইসলামসহ সঙ্গীয় পুলিশ ফোর্স উপস্থিত ছিলেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সাদুল্লাপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মাসুদ রানা জানান, আদালতের নির্দেশে ছকু মিয়ার লাশ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, ছকু মিয়ার লাশ উত্তোলনের খবর পেয়ে দামোদরপুর ইউনিয়ন ছাড়াও আশপাশের কয়েক গ্রামের শতশত উৎসুক নারী-পুরুষ ঘটনাস্থলে ভিড় জমান। এর আগে, গত ৩ জুন ঢাকার গাজিপুরের মৌচাক এলাকায় রিক্সা চালাতে গিয়ে মারা যান ছকু মিয়া। পরদিন তার লাশ বাড়িতে এনে তড়িঘড়ি করে দাফন করা হয়। গত ১৫ মে ছকু মিয়াকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে রাতভর আটকে মারধরসহ নির্যাতন চালায় পূর্ব দামোদরপুর গ্রামের প্রভাবশালী মন্টু মিয়া ও আলমগীরসহ তার ছয় ভাই।
এ ঘটনায় ছকু মিয়ার ছেলে মোজাম্মেল হক বাবাকে হত্যার অভিযোগ এনে গত ১৬ জুন জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে (সাদুল্লাপুর) একটি পিটিশন মামলা দায়ের করেন। পরে আদালতের বিচারক শবনম মুস্তারী সাদুল্লাপুর থানা পুলিশ মামলাটি রেকর্ডভুক্ত করা ও লাশ উত্তোলনসহ প্রতিবেদন দাখিলে আগামী ২৩ জুন দিন ধার্য্য করেন।
মামলার বাদি মোজাম্মেল হকের অভিযোগ, দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্কের সূত্রে প্রভাবশালী মন্টু মিয়ার মেয়ে তার হাত ধরে পালিয়ে যায়। পরে তার রিকশা চালক বাবা ছকু মিয়াকে ধরে নিয়ে গিয়ে রাতভর নির্যাতন চালায় প্রভাবশালী মেয়ের বাবাসহ তার পাঁচ ভাই। একই সঙ্গে জনপ্রতিনিধির উপস্থিতিতে সালিস বৈঠকে আমার দরিদ্র পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে গ্রাম ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এমনকি বাড়ির একটি ঘরও বিক্রি করতে তাদের বাধ্য করা হয়। প্রভাবশালী ছয় ভাইয়ের নির্যাতনের বাবার মৃত্যু হয়েছে। বাবার মৃত্যুর ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্ত শাস্তির দাবিও করেন তিনি।