বুধবার, ২৯ মার্চ ২০২৩, ০৭:৩৭ পূর্বাহ্ন
সুন্দরগঞ্জ প্রতিনিধিঃ শীত পরছে এরই মধ্যে ভোর রাতেই জেগে ওঠে পাড়াটি। পরিবারের সকলেই হাত লাগায় বড়া তৈরির কাজে;কেউ যাঁতায় ডালের গা থেকে ছাল ছড়ায়, কেউ ডাল ধুয়ে পরিষ্কার করে, কেউ শিলপাটায় কেউ ঢেঁকিতে ডাল গুঁড়া করে, আবার কেউ চাল-ডাল একসাথে গুলিয়ে বড়া তৈরি করে।
সুন্দরগঞ্জের বামনডাঙ্গা ইউনিয়নে অবস্থিত ফলগাছা গ্রামের সেনপাড়া। এ গ্রামের অধিকাংশ হিন্দু পরিবারের লোকজন এই ডালের বড়া তৈরি করেন। এই ডালের বড়া সুস্বাদু এবং চাহিদাও খুব। গ্রামের স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাও পড়ালেখার ফাঁকে ডালের বড়া তৈরিতে পিতা মাতাকে সহযোগিতা করে থাকে। এটা তাদের পরিবারের বাড়িত আয়ের অন্যতম একটি উৎস।
অর্চনা রাণী ও কমলি রাণী জানান, ডালের বড়ার উপকরণও খুব একটা বেশি নয়। প্রথমে ঠাকুরি বা মাষ কলাইয়ের ডাল গুড়ো করতে হয়। তারপর ডালে কালো জিরা মিশিয়ে ভালোভাবে ফেটে মিশিয়ে নিতে হয়। তারপর তৈরি হয় ডালের বড়া। এরপর চড়া রোদে পরিষ্কার পুরনো ঢেউ টিন বা কাপড় বিছিয়ে সব উপকরণ মেশানো ডালের ম- হাতের মুষ্ঠিতে চেপে চেপে বিশেষ কায়দায় তার উপরে রাখতে হয়। নির্দিষ্ট আকারের বড়াগুলো তখন দেখতেও অনেক সুন্দর লাগে। সবশেষে রোদে শুকিয়ে তৈরি হয় ডালের বড়া।
অমল চন্দ্র বলেন, অক্টোবর মাসের শেষ থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত চলে ডালের বড়া তৈরির কাজ। তিনি বলেন, এটা খুব খাটনির কাজ, যাঁতায় ডালের ছাল ছড়ানোর পর বড়া তৈরি করে রোদে শুকিয়ে ঝনঝনা করতে প্রায় ৩/৪ দিন লাগে। এরপরই বড়া বাজারে পাইকারি বা খুচরা বিক্রি করা হয়।
অনিল চন্দ্র বলেন, বড়া তৈরি তাদের বাপ দাদার পেশা। ভোর তিনটায় ঘুম থেকে ওঠে বড়া তৈরির কাজ করতে হয়। এ সময়ে প্রচুর চাহিদা আছে এই বড়ার। ঠাকুরি কালাইয়ের দাম এবার অনেক বেড়েছে, আগে ৫০ কেজি বস্তা ছিল ২৬’শ টাকা এখন সেই বস্তার দাম ৪ হাজার টাকা। সে কারণে আগের মতো আর লাভ আসে না।