শুক্রবার, ৩১ মার্চ ২০২৩, ০৮:৫৯ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টারঃ তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, করতোয়া, ঘাঘট, বাঙ্গালী বেষ্টিত গাইবান্ধার নদ-নদীতে বাড়ছে পানি। প্রতিবছর নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে নদ-নদীর অববাহিকা, খাল-বিল ও চরাঞ্চলের জলাশয়গুলোতে বর্ষার নতুন পানি প্রবেশ করে। পানি বৃদ্ধির এই মৌসুমে পাল্লা দিয়ে বেড়ে যায় মাছ ধরার ফাঁদ বিক্রিও। নদী-খাল-বিলসহ বর্ষার পানি প্রবেশ করে এমন সব এলাকার লোকজন বর্ষার এই সময়টায় ব্যস্ত থাকে মাছ ধরা নিয়ে।
এসময় দেশি মিঠা পানির মাছ ধরার জন্য গ্রামের মানুষ ব্যবহার করে বাঁশের তৈরি বিশেষ এই ফাঁদ। বাঁশের শলা দিয়ে তৈরি মাছ ধরার এ ফাঁদের নাম চাঁই। গ্রামাঞ্চলে মাছ ধরার আদি উপকরণের মধ্যে একটি হচ্ছে বাঁশের চাঁই। বাঁশ, বেত দিয়ে তৈরি করা মাছ ধরার এসব সরঞ্জাম নিয়ে বিক্রেতারা হাটে নিয়ে বিক্রি করছে।
বর্ষা মৌসুম আসলেই সদর উপজেলার তুলশীঘাট, দারিয়াপুর, বাদিয়াখালী, কামারজানি ও লক্ষ্মিপুর হাটসহ জেলার প্রায় সবগুলো সাপ্তাহিক হাট-বাজারে চাঁই, বুচনা, আইডা, গোলচাঁইসহ মাছ ধরার উপকরণের পসরা সাজিয়ে বসেন বিক্রেতারা। পেশাদার মাছ শিকারী থেকে শুরু করে সৌখিন শিকারীরা পর্যন্ত কিনে নিচ্ছে মাছ ধরার এসব সরঞ্জাম।
গাইবান্ধার বিভিন্ন হাট ঘুরে জানা গেছে, সারাবছর ধরে চাঁই-বুচনা তৈরি করে থাকেন গ্রামের নারী ও পুরুষরা। তবে বর্ষার আগে এসব ফাঁদ বানানোর ধুম পড়ে যায় আর বর্ষার শুরু থেকে সেসব সরঞ্জাম স্থানীয় হাট-বাজারে বিক্রির জন্য ওঠানো হয়। এসব হাট থেকে যেমন খুচরা ক্রেতারা চাঁই কিনেন, তেমনি আবার পাইকাররা কিনে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রির জন্য পাঠান।
সদর উপজেলার সাহাপাড়া ইউনিয়নের খামার পীরগাছা গ্রামের মোন্নাফ মিয়া জানান, মাছ ধরার এসব সামগ্রী তৈরির কাজ তিনি প্রায় ৩০ বছর ধরে করছেন। বর্ষায় এসব সামগ্রীর কদর বহুগুণে বেড়ে যায়। তাই বাঁশ, সূতা ও প্লাস্টিকের রশি দিয়ে চাঁই, বুরুন, দোয়ারি, ছোট পার, বড় পারসহ বিভিন্ন উপকরণ তৈরি করা হয়। তিনি জানান, এসব তৈরিতে প্রকারভেদে খরচ পড়ে ৪০ থেকে ৩শ’ টাকা। আর তা বিক্রি হয় ১শ’ থেকে ৫শ’ টাকায়। বাঁশের দাম বাড়ায় মাছ ধরার ফাঁদের দামও বেড়েছে। ফলে আগের মতো আর লাভ হয়না।
বিক্রেতারা জানান, মাছ ধরার এসব সরঞ্জাম আকার ও গুণগত মানভেদে বিক্রি হয় বিভিন্ন দামে। বৈশাখ থেকে আষাঢ় মাসে মাছ শিকারের এসব সামগ্রী বিক্রি হয় সবচে বেশি।