রবিবার, ০১ অক্টোবর ২০২৩, ১০:৩৬ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টারঃ বন্যার ধকল কাটতে না কাটতেই আরেক বিপদের সম্মুখিন হয়েছে ফুলছড়ি উপজেলার উড়িয়া ইউনিয়নের নদী পাড়ের মানুষগুলো। তাদের মাঝে আতংক হয়ে দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন। গত এক সপ্তাহে নদী ভাঙনের শিকার হয়ে শতাধিক পরিবারের ঘর-বাড়ি, ফসলি জমি, গাছ, কবরস্থান নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। তীব্র ভাঙনের মুখে রয়েছে আরও শতাধিক পরিবারের বাড়ি ও ফসলি জমি।
কিছুদিন আগেই বন্যার পানিতে তলিয়ে গিয়েছিল ঘর-বাড়ি ও আবাদী ফসল। বন্যার ক্ষয়ক্ষতির পর তারা বাড়িঘরে উঠেছেন মাত্র। বিপদ যেন পিছু ছাড়ছে না তাদের। বন্যার ধকল কাটতে না কাটতে দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন। ব্রহ্মপুত্র নদের ব্যাপক ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন অনেকে। কোথায় গেলে মাথা গোঁজার ঠাঁই পাবেন এমন চিন্তায় উদ্বিগ্ন ভাঙন কবলিত মানুষগুলো। অনেকে নিরুপায় হয়ে নদী পাড়েই আবার ঘর উঠিয়ে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। ফুলছড়ি উপজেলার উড়িয়া ইউনিয়নের ভুষিরভিটা এলাকায় গত এক সপ্তাহে শতাধিক পরিবার নদী ভাঙনের শিকার হয়ে বাস্তুভিটা হারিয়েছেন। এবারের তিন দফা বন্যার পর থেকে ইতিমধ্যে ভূষিরভিটা গ্রামের এক চতুর্থাংশ এলাকার দুই শতাধিক পরিবার নদী ভাঙনে শিকার হয়েছেন। সেখানে নদী তীরের ভাঙনের দৃশ্য চোখে পড়ছে। নদীর পাড় ভেঙে পড়া মাটির চাকাও দৃশ্যমান। ভাঙন কবলিত মানুষগুলোর সহযোগিতায় এখন পর্যন্ত এগিয়ে আসেনি কেউ। নদী ভাঙনরোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহনের দাবী জানিয়েছে ভুক্তভোগীরা।
একাধিকবার নদী ভাঙনের শিকার দাম উল্লাহ (৯০), কাইয়ুম মিয়া (৭৫) ও ছন্দবাদ মিয়া (৪০) সহ অনেকে জানান, এক সময় আমাদের জমিজমা, ফসল, ঘর-বাড়ি সবই ছিল। সর্বনাশা নদী ভাঙনে আমাদের সবকিছু কেড়ে নিয়েছে। আজ কোথায় গিয়ে আশ্রয় নিব, ভেবে পাচ্ছি না। সর্বশেষ দুইদিন আগে বসতভিটা হারানো ময়না বেগম (৭০) বলেন, কালাসোনা গ্রামে তাদের আদিনিবাস ছিল। এ পর্যন্ত সাতবার নদী ভাঙনের শিকার হয়ে বাড়িঘর সরিয়েছি। এবার কোথায় যাবো এ চিন্তায় দিশেহারা। তিনি বলেন, ভাদ্র মাসে যে ভাঙন শুরু হয়েছে এমন ভাঙন জীবনেও দেখিনি।
এ ব্যাপারে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোকলেছুর রহমান জানান, বাংলাদেশ অভ্যন্তরিন নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডাবিউটিএ) ওই পয়েন্টে নদী পুনঃখননের লক্ষে ড্রেজিং করায় ওই এলাকায় পানির স্রোত বেড়ে গেছে। আমরা পুনঃখনন কাজে আপত্তি করেছিলাম কিন্তু শোনা হয়নি। বিআইডাবিউটিএ নদীর পাড় ঘেষে ড্রেজিং করার কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তিনি বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে আপাদত এই ভাঙন রোধে কোন কর্মসূচি নেই।