সোমবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৮:২৮ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টারঃ প্রতিটি ব্যক্তির সফলতার পিছনে থাকেন তিনি নিজেই। কারণ, তার ইচ্ছাশক্তি, লক্ষ্য পূরণের বাস্তবিক প্রয়োগ এবং অদম্য মনোবল তাকে নিয়ে যেতে পারে বহুদূর। তেমনি একজন নারী উদ্যোক্তা সাবিনা ইয়াসমিন।
এক সময় এনজিওতে চাকরি করা এই নারী নিজের ইচ্ছাশক্তি কাজে লাগিয়ে সাড়া ফেলেছেন নদীভাঙন ও মঙ্গা কবলিত এলাকা গাইবান্ধায়। ৩৪ বছর বয়সী এই নারী উদ্যোক্তা শুধু সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে নিরাশা দূরীকরণ আর্থসামাজিক উন্নয়ন সংস্থা (ডিএসডিও) নামে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা শুরু হয় ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে।
ধানঘরা এলাকার শম্পা ৫ মাস আগে থেকে কাজ শুরু করেছেন প্রতিষ্ঠানটিতে। তার কাজ ঝুট কাপড় থেকে সুতা তৈরি করা। প্রতিদিন ২০-২৫ কেজি সুতা তৈরি করতে পারেন। চুক্তিভিত্তিতে এক কেজি সুতা তৈরি করলে ১০ টাকা পাওয়া যায়। সেই হিসেবে ৬ ঘণ্টা কাজ করে ২৫০ টাকা পর্যন্ত পান।
স্বামী পরিত্যক্তা অল্প বয়সী নারী বিউট বেগম। আট বছর আগে স্বামী ছেড়ে চলে গেছেন। এক মেয়ে নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটছিল তার। ছয় মাস আগে প্রতিবেশী এক নারীর মাধ্যমে এখানে এসে প্রশিক্ষণ নেন। এরপর এ প্রতিষ্ঠানে কাজের সুযোগ পান তিনি। প্রতিদিন ৩৫০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা মজুরি পান তিনি। এখন তিনি অনেক ভালো আছেন।
এ রকম শিউলি, আসমা, সুলতানাসহ দুই শতাধিক নারী কাজ করছেন প্রতিষ্ঠানটিতে। তারা বলেন, প্রতিষ্ঠানের কথা প্রতিবেশিসহ বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পারেন। পরে সেখানে (ডিএসডিও) গিয়ে প্রথমে প্রশিক্ষণ নিয়ে কাজ শেখেন। এরপর সেখানে কাজ শুরু করেন। আয়ের টাকায় সাংসারিক খরচ ছাড়াও বাড়তি টাকা সঞ্চয় করার কথাও জানালেন কেউ কেউ।
আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল নারীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিতে গাইবান্ধা শহরতলীর বল্লমঝাড় ইউনিয়নের ধানঘড়া এলাকায় গড়ে তোলা হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। সরেজমিন দেখা যায়, নারীরা কয়েকটি শিফটে কাজ করছেন। প্রতি শিফটে ৮০ জন নারী কাজ করেন। বর্তমানে পাইলট প্রকল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠানটিতে গার্মেন্টসের ঝুট কাপড় দিয়ে রঙ-বেরঙের পাপোশ তৈরি প্রকল্পের কাজ চলছে। পাশাপাশি দ্বিতীয় পাইলট প্রকল্প হিসেবে নারীদের ব্যক্তিগত ব্যবহারের জিনিসপত্র তৈরির কাজ শুরু হয়েছে।