শুক্রবার, ০২ জুন ২০২৩, ১০:১৭ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টারঃ পলাশবাড়ী উপজেলার হোসেনপুর ও কিশোরগাড়ি ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে আখিরা নদী। নদীতে সেতু না থাকায় এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁশের সাঁকো নির্মাণের চেষ্টা করেন। সাঁকোর খুঁটি স্থাপন করা হলেও অর্থাভাবে পাটাতন দেওয়া যায়নি। এখন দুই ইউনিয়নের ১৪ গ্রামের মানুষের যোগাযোগের ভরসা ছোট একটি নৌকা।
গাইবান্ধা শহর থেকে প্রায় ২৭ কিলোমিটার দূরে কিশোরগাড়ি ইউনিয়নের জাফর গ্রাম। গত ২০ মে সকালে সরেজমিন দেখা গেছে, গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে আখিরা নদী। খুঁটি পোতা অসম্পন্ন সাঁকোর পাশ দিয়ে লোকজন ছোট নৌকায় নদী পারাপার হচ্ছেন। নদীর দুই ধারে কাঁচা সড়ক রয়েছে। ছোট্ট নৌকায় করে লোকজন যাতায়াত করছেন। নৌকায় একবারে পাঁচ-সাতজনের বেশি যাত্রী নেওয়া যায় না। জনপ্রতি পাঁচ টাকায় লোক পারাপার হচ্ছেন। মোটরসাইকেল ও রিকশা পারাপারের সুযোগ নেই।
নৌকাচালক খবির মিয়া বলেন, এ ঘাটটি ইজারা হয় না। তিনি মানুষের সুবিধার জন্য লোক পারাপার করছেন।
স্থানীয় ব্যক্তিরা বলেন, হোসেনপুর ইউনিয়নের আমবাগান, খাসবাড়ি, হাসবাড়ি, হাসানখোর ও রামচন্দ্রপুর গ্রাম। ওপারে কিশোরগাড়ি ইউনিয়নের জাফর, মংলিশপুর, কুমারপাড়া, নাপিতপাড়া, গণকপাড়া, নয়নপুর, কর্তিপাড়া, চকমেলি ও করতোয়াপাড়া গ্রাম। কয়েক বছর আগে দুই ইউনিয়নের লোকজন আখিরা নদীর ওপর স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁশের সাঁকো নির্মাণের উদ্যোগ নেন। খুঁটিও স্থাপন করেন। কিন্তু অর্থাভাবে খুঁটির ওপর পাটাতন দেওয়া সম্ভব হয়নি। ফলে এখন দুই ইউনিয়নের মানুষ নৌকা করে পারাপার হচ্ছেন। ফলে ১৪ গ্রামের মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। এ নদী পার হয়ে তাঁদের পলাশবাড়ী উপজেলা ও পার্শ্ববর্তী ঘোড়াঘাট সদরে যেতে হয়।
জাফর গ্রামের ব্যবসায়ী শরিফুল ইসলাম বলেন, এখানে সেতু নির্মাণের জন্য অসংখ্যবার জনপ্রতিনিধিদের অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু তাঁদের সাড়া মেলেনি।
মংলিশপুর গ্রামের চাদোকানি আলম মিয়া (৪২) বলেন, একন্যা বিরিজের জন্নে হামরা চেরমেনোক কচি। কিনতো বিরিজ হয় নাই। তাই হামরা নিজেরাই ট্যাকা দিয়া, কামলা দিয়া সাঁকোখ্যান বানবার ধরি, ট্যাকা না থাকায় আটকি গেচি। নাওয়োত ট্যাকা দিয়া পার হবার নাগচি।
দুই ইউনিয়নের কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তিন হাজারের বেশি শিক্ষার্থী ঝুঁকি নিয়ে জাফর ঘাট হয়ে নদী পারাপার হচ্ছে। নাপিতপাড়া গ্রামের স্কুলছাত্র রফিকুল ইসলাম বলে, নদীতে পানি বেড়ে যাওয়ায় এখন স্রোত। ঘাটে একটি মাত্র নৌকা। সেটি অনেক ছোট। পাঁচ-সাতজনের বেশি উঠলে দোল খায়।
হোসেনপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান তৌফিকুল আমিন ম-ল ও কিশোরগাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক বলেন, এখানে সেতু নির্মাণে উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।
উপজেলা চেয়ারম্যান এ কে এম মোকছেদ চৌধুরী বলেন, এখানে সেতু নির্মাণে ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরকে (এলজিইডি) বলা হয়েছে।
গাইবান্ধা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী ছাবিউল ইসলাম বলেন, জাফর এলাকায় আখিরা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।