শুক্রবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৯:২৩ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টারঃ বেকারত্ব দুর করতে ও নিজেকে স্বাবলম্বী করার স্বপ্ন নিয়ে পলাশবাড়ীতে বিদেশি জাতের ফ্রিজিয়ান গরু পালন করে কোটিপতি হয়েছেন লালা চৌধুরী। তিনি উপজেলার মহদীপুর ইউনিয়নের ঝালিঙ্গী গ্রামের সেকেন্দার আলীর ছেলে। তার গাভী থেকে দেয়া দুধ বিক্রি করে দৈনিক ১০ হাজার টাকা আয় করছেন।
সরেজমিনে জানা যায়, পলাশবাড়ী উপজেলার মহদীপুর ইউনিয়নের ঝালিঙ্গী গ্রামের সেকেন্দার আলীর ছেলে লালা চৌধুরী ঢাকায় একটি বে-সরকারী কোম্পানীতে চাকুরি করতেন। দীর্ঘদিন চাকুরী করার এক পর্যায়ে হঠাৎ চাকুরি ছেড়ে দিয়ে বাড়িতে চলে আসেন। বাড়িতে এসে তিনি কোন কাজকর্ম না থাকায় দিশেহারা হয়ে পড়েন। কিভাবে তিনি তার বেকারত্ব মোচন করবেন এবং তিনি স্বপ্ন দেখতেন নিজেকে স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলার।
এক পর্যায়ে তিনি ঠিক করলেন ছোট আকারে ছাগল ও গাভী পালন শুরু করবেন। ভাবনার সাথে সাথে ২০১৯ সালের ১৮ জুন পলাশবাড়ী উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা আলতাব হোসেন এর পরামর্শে ৪ ছাগল ও একটি বকনা গাভী ক্রয় করে নিয়ে আসেন। একই সাথে তার বাড়ির পাশে নিজস্ব ৫০ শতাংশ জমির মধ্যে ২০ শতাংশ জমির ওপর গরুর সীড তৈরি এবং ৩০ শতাংশ জমিতে নিপিয়ার পাঞ্চং ঘাস রোপন করে খামারী শুরু করেন।
এরপর আবারও দুই মাস পর ৯২ হাজার টাকা দিয়ে বিদেশী জাতের একটি ফ্রিজিয়ান গাভী ক্রয় করেন। তিনি একজন সফল খামারী হওয়ার স্বপ্নে আবারও কিছুদিন যেতে না যেতেই এক মাস পর পাশ্ববর্তী পীরগঞ্জের হাট গিয়ে ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা দরে বিদেশী জাতের আরও ফ্রিজিয়ান দুটি গাভী ও বেতকাপা থেকে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা দিয়ে একটি গাভী ক্রয় করে নিয়ে আসেন।তার ক্রয়কৃত চারটি ছাগল ও পাঁচটি গাভী পালনে মধ্যদিয়ে খামারে নিজেই শ্রম দিতে লাগেন।
তিনি সার্বক্ষনিক সময়ের জন্য তার খামারে গাভীগুলোর দেখাশুনা, যথাসময়ে খাবার দেওয়া,পানি পান করানো, রোপনকৃত জমি থেকে ঘাস কর্তন করে ঘাস দেওয়া, গাভীর মলমুত্র পরিস্কার করা, গাভীর যত্ন নেওয়া, ওষধ খাওয়ানোসহ সব কাজ নিজেই করেন। তার উদ্যোগ দেখে পলাশবাড়ী উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে ব্লাক বেঙ্গল জাতের ২টি পাঠা ছাগল, একটি ছাগলের ঘর নির্মানসহ খাদ্য, ওষধপত্র প্রদান ও প্রণোদনা হিসেবে ১০ হাজার টাকা ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা দেয়া হয়।
সময় যাওয়ার সাথে সাথে ধীরে ধীরে গাভীগুলো বাছুর দিতে শুরু করে। আস্তে আস্তে তার খামারে বেড়ে যায় গাভীর সংখ্যা ও কাজের চাপ। খামারে কাজের চাপ বেশি হওয়ায় খামারে গাভীগুলোর দেখাশুনার জন্য ওই গ্রামের আইয়ুব আলী ও আরব খাঁ নামে দুই ব্যক্তিকে দৈনিক ৪০০ টাকা করে দেওয়ার শর্তে শ্রমিক নেন এবং তিনি নিজে সাথে থেকে সকল কাজকর্ম করেন। লালা চৌধুরীর কঠোর পরিশ্রমে এখন তার খামারে গাভীর সংখ্যা বেড়ে বর্তমানে বিদেশী জাতের ফ্রিজিয়ান ৩২টি গাভী দাড়িয়েছে। গাভী থেকে দৈনিক ২শ লিটার দুধ দিচ্ছে। দুধ বিক্রি করে তার দৈনিক প্রায় ১০ হাজার টাকা আয় বেড়েছে। এখন তিনি একজন সফল খামারী। বর্তমানে ফ্রিজিয়ান ৩২টি গাভীর বাজার মুল্য প্রায় ১ কোটি। এক একটি গাভীর বাজার মুল্য ৩ থেকে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা। সর্ব সার্কুল্যে ৩০টি গাভী মুল্য প্রায় ১ কোটি।
সফল খামারী লালা চৌধুরী জানান, আমার খামারে ৩২টি ফ্রিজিয়ান গাভী আছে যার মুল্য প্রায় ১ কোটি হবে।