রবিবার, ০৪ জুন ২০২৩, ১২:৩৩ পূর্বাহ্ন
নলডাঙ্গা (সাদুল্লাপুর) প্রতিনিধিঃ সাদুল্লাপুর উপজেলার নলডাঙ্গা-সাদুল্লাপুর পাকা সড়কের নলডাঙ্গা বন্দর অভ্যন্তরের জনগুরুত্বপূর্ন ১নং রেলগেট বটতলা হতে লিচুর মিল পর্যন্ত প্রায় আধা কিঃ মিঃ সড়কটির সংস্কার ও মেরামতের জন্য বরাদ্দ থাকলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও ঠিকাদারের গাফিলাতি, খামখেয়ালীপনা, আর চরম অবহেলায় বছর পেরিয়ে গেলেও অদ্যবধি সড়কটির কোন রকম সংস্কার কিংবা মেরামত না করায় সড়কটি এখন বেহালদশায় পরিনত হয়ে সর্বসাধারনের চলাচলে অবর্ণণীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার দামোদরপুর ইউনিয়নের জালাদুর মোড় হতে নলডাঙ্গা ১নং রেলগেট বটতলা পর্যন্ত ৭ কিঃ মিঃ সড়কটি সংস্কার ও মেরামতের জন্য ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে এলজিইডির অর্থায়নে ও বাস্তবায়নে ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ রবিউল আলম নামের এক ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কাজটি পেলেও উজ্জ্বল নামের জনৈক এক ঠিকাদার এ কাজটি করেন। ইতিমধ্যে বরাদ্দকৃত ৭কিঃমিঃ সড়কের মধ্যে প্রায় সাড়ে ছয় কিঃমিঃ সড়কের কাজ সম্পন্ন করা হলেও অবশিষ্ট আঁধা কিঃমিঃ সড়কের কাজ চুক্তির মেয়াদ শেষ হলেও আজও তা করা হয়নি। সাদুল্লাপুর ্উপজেলা প্রকৌশলী এ,এইচএম কামরুল হাসান রনি বলেন, দ্রুত কাজটি করার জন্য ঠিকাদারকে বলা হয়েছে খুব শীঘ্রই কাজটি কাজ শুরু হবে। কাজটি দেখভালর দায়িত্বে নিয়োজিত উপ-সহকারী প্রকৌশলী পারভেজ বলেন, বর্ষাকাল ও ইট সংকটের কারনে ঠিকাদার যথাসময়ে কাজটি করতে পারেননি। তবে এরই মধ্যে কাজটি করার জন্য তিনি সময় বৃদ্ধি করে নিয়েছেন। ঠিকাদার উজ্জ¦ল বলেন, কাজটি করার জন্য খোঁয়া ভাঙ্গার কাজ চলছে। আগামী সপ্তাহেই কাজ শুরু করা হবে। এদিকে ভুক্তভোগিদের নিকট থেকে জানা গেছে সড়কটি দিয়ে এ উপজেলার নলডাঙ্গা সহ পাশর্^বর্তী অঞ্চলের বিশাল জনগোষ্টি রাজধানী ঢাকা, জেলা শহর গাইবান্ধা ও উপজেলা শহর সাদুল্লাপুর সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে থাকেন। বর্তমানে সড়কটির অধিকাংশ স্থানে কার্পেটিং ও খোয়া উঠে গিয়ে বিশাল বিশাল গতের্র সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে বর্ষাকালে সামান্য বৃষ্টিতেই এসব সৃষ্ট খাদে হাটু পানি জমে থাকে। দীর্ঘদিন পর্যন্ত জলবদ্ধতার কারণে হাজার হাজার পথচারী ও কোমলমতি স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থীসহ সকল প্রকার যানবাহন চলাচল দুরূহ হয়ে পড়ে। জনগুরুত্বপূর্ণ ব্যস্ততম সড়কটি দিয়ে দিবারাত্রি, বাস, কোচ, ট্রাক, মাইক্রোবাস, সিএনজি, অটোবাইক, ব্যাটারী চালিত ভ্যানসহ নানা ধরনের হালকা ও ভারী যানবাহন চলাচল করে। এ পরিস্থিতিতে আঁধা কিঃ মিঃ এ সড়কটি দিয়ে পাঁয়ে হেঁটে চলাচল করা অনেকটাই দুস্কর হয়ে পড়ছে। এমতবস্থায় সড়কটি দিয়ে পাঁয়ে হেঁটে চলাচল করতে গিয়ে অনেকেই খাদে পড়ে রক্তাত্ত জখম হয়েছেন বলে জানা গেছে। ভুক্তভোগিদের মতে সড়কটি এখন মৃত্যু ফাঁদে পরিণত হয়েছে। তবুও এ নিয়ে সংশ্লিষ্টজনদের কোন মাথা ব্যাথা নেই। কিন্ত এর মধ্যেও মানুষজন প্রয়োজনের তাগিদে নিরূপায় হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করছেন। দেখা গেছে ব্যাটারী চালিত রিক্সাভ্যান, মোটর সাইকেল ও বাইকেলে যোগে চলাচল করতে গিয়ে তীব্র ঝাঁকুনিতে নারী শিশু সহ অনেকেই ছিটকে রাস্তার উপর পড়ে গিয়ে রক্তাত্ত জখম হচ্ছেন। এসব যানবাহনের চালকেরা জানান অত্যন্ত সাবধানতার সাথে স্বাভাবিক গতিতে গাড়ী চালাতে গিয়েও অনেক সময় তা হঠাৎ গর্তে পড়ে নিয়ন্ত্রন হারিয়ে গাড়ী উল্টে গিয়ে মারাতœক দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হয়। এভাবে প্রায় প্রতিনিয়তই ঝুঁকিপূর্ণ সড়কটিতে ছোট খাট দুর্ঘটনা ঘটছেই। ভ্যান চালক মহির, জাহিদ, এনামুল হক ও রহমানসহ অনেকেই জানান অনেক যাত্রী তার গন্তব্য স্থলে তাড়াতাড়ি পৌঁছতে আমাদেরকে দ্রুত গাড়ী চালাতে বলেন । কিন্ত সড়কটি নাজুক পরিস্থিতির কারণে জোরে গাড়ী চালালেই যে কোন ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এ জন্য জোরে শোরে গাড়ী চালানো সম্ভব হয়না। এ নিয়ে প্রায়ই যাত্রীদের সাথে তুমুল বাকবিতন্ডা হয় বলে তারা জানান। তারা আরও জানান সড়কটির এমন অবস্থাতে আমরা খুব ভয়ে ধীরে ধীরে সাবধানতার সাথে গাড়ী চালাই। সড়কটির এ অবস্থার ফলে বিশেষ করে কোন মুমুর্ষ রোগিকে এ্যাম্বুলেন্স কিংবা অন্য কোন যানবাহন যোগে উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত কোন হাসপাতালে নিতে গিয়ে অসহনীয় ঝাকুনিতে রোগির যেন আরও বারোটা বেজে যায়। এদিকে আবার পথচারীদের অভিযোগ একটু বৃষ্টি হলেই সড়কটিতে সার্বক্ষনিক কাঁদাযুক্ত পানি জমে থাকে। কিন্ত এর মধ্যে দিয়ে বাস ট্রাক সহ অন্যান্য যানবাহন চলাচলের সময় গর্তে জমে থাকা কর্দামাক্ত পানি পথচারীদের গায়ে ছিটকে গিয়ে পড়ে। এ নিয়েও মাঝে মধ্যে চালক ও হেলপারদের সঙ্গে পথচারীদের তুমুল বাকবিতন্ডা সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে তা কখনো কখনো মারমুখী রূপ নেয় বলে জানা গেছে।