সোমবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৭:২৮ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টারঃ গরিব মানুষের লাইনে মুখ ঢেকে অথবা বোরকা পরে সামর্থ্যবান নারী-পুরুষের দীর্ঘ লাইন ওএমএস কেন্দ্রগুলোতে। বিক্রি শুরু হলেই আধা ঘণ্টার মধ্যে শেষ হয়ে যাচ্ছে পণ্য। সপ্তাহে পাঁচ দিন ওএমএস-এর ৯ মেট্রিক টন চাল ও আটা দিয়েও কুলিয়ে উঠতে পারছে না গাইবান্ধা খাদ্য বিভাগ। গাইবান্ধা জেলা খাদ্য বিভাগের রিপোর্ট অনুযায়ী দিন দিন মধ্যবিত্তরাও ওএমএস’র লাইনে দাঁড়িয়ে চাল-আটা সংগ্রহ করার কারণে চাহিদা মেটানো যাচ্ছে না। ফলে এদের মধ্য অনেকেই ফিরে যাচ্ছেন। চাহিদার কথা জানিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানায় খাদ্য বিভাগ। জেলা খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গাইবান্ধা জেলার সাত উপজেলায় স্বল্পমূল্যে চাল-আটা বিক্রির জন্য ২০ জন ওএমএস ডিলার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পণ্য স্বল্পতার কারণে পালাক্রমে ৯ জন ডিলারকে দিয়ে গাইবান্ধা পৌর এলাকার ৯টি পয়েন্টে ওএমএস’র চাল ও আটা বিক্রি করা হয়। ডিলাররা হলেন-কালীবাড়ি পাড়ায় সিজু মিয়া, ডেভিট কোং পাড়ায় মোহাম্মদ আলী, ব্রিজ রোডে মশিউর রহমান, বাংলাবাজারে তরিকুল ইসলাম, নিউ ব্রিজ রোডে আরাফাত মাহম্মুদ সেলিম, কালীবাড়ি পাড়ায় রামেশ্বর সাহা, পৌর পার্কে মোঃ আলম, হকার্স মাকেটে তসলিমা আকতার সীমা, খানকা শরিফে মশিউর রহমান, পূর্বপাড়ায় জহুরুল হক, পুলিশ লাইনে নিলুফার ইয়াসমীন, ব্রিজ রোডে সালাহ উদ্দিন, তিন গাছের তলে মুর্শিদ হাসান, খানকা শরীফে ইয়ার উদ্দিন, থানায় পাড়ায় গোলাম রহমান, সুখ শান্তির বাজারে জুলফিকার আলী সরকার, খানকা শরিফে উম্মে কুলসুম, কলেজ রোডে আহসান হাবীব, প্রফেসর কলোনিতে অসিফ সরকার, বাসস্ট্যান্ডে সাজেদুল ইসলাম বাবুসহ ২০ জন। গাইবান্ধা পৌর এলাকার এ ২০টি পয়েন্টে চাল ও আটা বিক্রির কাজে নিয়োজিত রয়েছেন তারা। তবে এদের মধ্যে পালাক্রমে ৯ জন ডিলারকে এক মেট্রিক টন চাল ও এক মেট্রিক টন আটা বিক্রির জন্য দেওয়া হয়। জনপ্রতি পাঁচ কেজি আটা ও ৩০ টাকা কেজিতে পাঁচ কেজি করে চাল নিতে পারবেন। কিন্তু ওএমএস’র বিক্রয় কেন্দ্রগুলোতে টোকেন ছাড়া অন্য কেউ চাল-আটা পাচ্ছেন না। ফলে প্রতিদিন লাইনে দাঁড়িয়েও শত শত মানুষ ফিরে যাচ্ছেন খালি ব্যাগ হাতে। মর্জিনা বেগম বোয়ালী থেকে দীর্ঘ লাইলে দাঁড়িয়ে আটা-চাল কিছুই পাননি। তিনি বলেন, গরিবের জন্য চাল-আটার লাইনে এখন সবাই দাঁড়ায়। আমি গরিব মানুষ আমার নামে কোন স্লিপ দেওয়া হয়নি। গরিব মানুষের জন্য চাল-আটা বিক্রির কেন্দ্র খোলা হলেও আমরা পাই না। বলা হয়, কার্ড নিয়ে আসেন। কীভাবে কোন দিন কার্ড দেওয়া হলো তা জানতেই পারলাম না। গরিবের হক মেরে বড়লোকদের দেওয়া হচ্ছে চাল-আটা। বড়লোকদের নামে দেওয়া হয় কার্ড। কার্ডধারী বিল্ডিং বাড়ির মালিক ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, চাল আটার টোকেন নিয়েছি। সপ্তাহে আটা কিনি লাইনে দাঁড়িয়ে। কিন্তু প্রতিজনকে পাঁচ কেজি দেওয়ার কথা থাকলেও কোনো নিয়ম মানা হচ্ছে না। কাউকে দেওয়া হয় দুই কেজি, কাউকে দেওয়া হয় চার কেজি। তাও আবার ওজনে হয় কম।