সোমবার, ২৭ মার্চ ২০২৩, ০৩:৩০ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টারঃ উত্তরাঞ্চলের অবহেলিত মানুষের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত তিস্তা সেতু অবশেষে নির্মাণের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। সেতুটি ২৯০টি পাইলের মধ্যে ১০১টি পাইল বসানো হয়েছে। এছাড়া গাইবান্ধা অংশে এক কিলোমিটার সংযোগ সড়কের কাজ শেষ হয়েছে। সেতুটি নির্মাণ সম্পন্ন হলে লাখো মানুষের স্বপ্নপূরণ যেমনি হবে তেমনি সেতুটি চালু হলে উত্তরাঞ্চলে অর্থনীতি দ্বার খুলে যাবে। স্থানীয় সরকার বিভাগ (এলজিইডি)-এর পক্ষ থেকে বলা হয় সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ হবে।
জানা গেছে, সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুরঘাট থেকে তিস্তা নদীর ওপর দিয়ে কুড়িগ্রামের চিলমারী পর্যন্ত ১ হাজার ৪৯০ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে। বৃহৎ এ সেতুটি গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রামের বাসিন্দা ছাড়াও কয়েক জেলার মানুষের স্বপ্ন ও দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি ছিল। ২০০১ সালে শুরু হওয়া আন্দোলন-সংগ্রামের পর সেতু নির্মাণ আলোর মুখ দেখতে পায় ২০১৪ সালের ২৫ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি নদীপারের লাখো মানুষের স্বপ্নের দ্বিতীয় এই তিস্তা সেতুর আনুষ্ঠানিক ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এই সেতু হলে ঢাকা-কুড়িগ্রাম ও ঢাকা-গাইবান্ধার যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হবে। তাছাড়া এতে সড়ক পথের দূরত্ব কমে আসবে প্রায় ১০০ কিলোমিটার। এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা গেছে, সেতুটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৩০ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। বরাদ্দের ২৭৯ কোটি ৪৭ লাখ টাকা মূল সেতু নির্মাণে ব্যয় হবে। আর সড়ক নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ কোটি ২৫ লাখ টাকা। এছাড়া নদী শাসনে ৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ও জমি অধিগ্রহণে ব্যয় হবে ৬ কোটি টাকা। এলজিইডির ব্যবস্থাপনায় নির্মিত সেতুটিতে পিলার স্থাপন হবে মোট ৩০টি। সেতুর উভয় পাশে নদীশাসন হবে ৩ দশমিক ১৫ কিলোমিটার করে। এছাড়া গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর-সুন্দরগঞ্জ-চিলমারী পর্যন্ত সংযোগ সড়ক নির্মাণ হবে ৮৬ কিলোমিটার।
তিস্তাপারের বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সেতুর কাজ শেষ হলে এটি হবে উত্তরাঞ্চলের নদীপারের মানুষের যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম। যোগাযোগের পথ সুগম হবে গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, লালমনিরহাট ও রংপুরের মানুষের। একই সঙ্গে এসব জেলার তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও করতোয়া নদীপারের হাজারও মানুষের ব্যবসার প্রসার ঘটবে। চিকিৎসা, শিক্ষাসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধাও বৃদ্ধি পাবে।
এলজিইডি গাইবান্ধার নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান কবির বলেন, প্রকল্পের আওতায় গাইবান্ধা এলজিইডি’র আওতায় ৬৫০ কোটি টাকার কাজ হবে। এর মধ্যে আছে ১০টি ব্রিজ, ৫৯টি কালভার্ট আর ৮৬ কিলোমিটার সড়ক। এছাড়াও জমি অধিগ্রহণে ব্যয় ধরা হয়েছ ১০০ কোটি টাকা। আমরা আশা করছি নিদিষ্ট সময়ের মধ্যেই কাজটি শেষ হবে।
চায়না স্টেট কন্সট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন (সিএসসিইসি) পরিকল্পনা প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম বলেন, এ যাবৎ আমাদের ১০১টি পিলারের কাজ শেষ হয়েছে। গাইবান্ধা হরিপুর সাইটে এক কিলোমিটার এপ্রোচ সড়কের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছ। সব মিলিয়ে ২০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। আশা করছি ২০২৩ সালের মধ্যে জুনের আগেই সব কাজ শেষ হবে।