শনিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৭:২১ অপরাহ্ন

টেলিগ্রাম ও পিসিও ভবনটির জীর্ণ দশা খোয়া যাচ্ছে দরজা জানালা

টেলিগ্রাম ও পিসিও ভবনটির জীর্ণ দশা খোয়া যাচ্ছে দরজা জানালা

স্টাফ রিপোর্টারঃ গাইবান্ধার টেলিগ্রাম ও পাবলিক কল অফিস (পিসিও) ভবনটির এখন জরাজীর্ণ দশা। অথচ এক সময় সরকারি টেলিফোন ও টেলিগ্রাম বিভাগের আওতাধীন শহরের পিকে বিশ্বাস রোডে গাইবান্ধা প্রধান ডাকঘর সংলগ্ন এই অফিসটি ছিল দ্রুত যোগাযোগ মাধ্যমের একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ অফিস। ব্যস্ততম সড়কের পাশে টেলিগ্রাম ও পিসিও অফিসটি অযত্ন অবহেলায় এখন গণশৌচাগার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। গোটা ভবনটি নানা আগাছায় পরিপূর্ণ হয়ে প্রাচীন পরিত্যক্ত ভবনের রূপ ধারণ করেছে। এমনকি অফিসের দরজা-জানালাসহ আসবাবপত্র খোয়া যাচ্ছে। মূল্যবান অফিস ভবনটিতে শ্যাওলা জন্মে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। মোবাইল টেলিফোন এবং ইন্টারনেট সার্ভিস চালু হওয়ার আগে একসময় মানুষের যোগাযোগের মাধ্যম ছিল ডাকযোগে প্রেরিত চিঠি এবং দ্রুত খবরা-খবর আদান প্রদানের জন্য টরে টক্কা কোডে পাঠানো টেলিগ্রাম। সেসময় শুধু জেলা ও মহুকুমা পর্যায়েই এই টেলিগ্রাম অফিস ছিল। ওই অফিসে টেলিগ্রামের নির্দিষ্ট ফরমে ইংরেজিতে বার্তাটি লিখে দিয়ে বার্তার অক্ষরের সংখ্যা অনুযায়ী ফি জমা দিতে হতো। ওই বার্তাটি টরে টক্কা মোস কোডে প্রাপকের মহুকুমা টেলিগ্রাম অফিসে প্রেরণ করা হতো। মহুকুমা অফিস থেকে শুধুমাত্র শহর এলাকায় তাদের নিজস্ব পিয়ন দিয়ে কাগজে ছাপানো ওই বার্তাটি বিলি করা হতো। আর মহুকুমার বাইরে ডাকযোগে প্রাপকের ঠিকানায় প্রেরণ করা হতো।পরবর্তীতে টিএন্ডটির আওতায় টেলিফোন সার্ভিস চালু হওয়ার পর টেলিগ্রামের পাশাপাশি সরকারি পিসিও (পাবলিক কল অফিস) হিসেবেও ব্যবহৃত হতে থাকে। তখন ওখান থেকে এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে টেলিফোনে কথা বলার সময় অনুযায়ী নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি জমা দিয়ে বাইরে অ্যান্ডডাবি¬উডি কল এবং স্থানীয় পর্যায়ে লোকাল কল করা যেতো। ফলে যোগাযোগ মাধ্যমের একমাত্র অফিস হিসেবে এই টেলিগ্রাম ও পিসিও অফিসটি মানুষের কাছে ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ঘরে ঘরে সরকারি টেলিফোন সার্ভিস চালু হওয়ার পর থেকেই এই অফিসটির গুরুত্ব কমতে থাকে। পরবর্তী পর্যায়ে মোবাইল ও টেলিফোন চালু হলে এই টরে টক্কা টেলিগ্রাম সার্ভিস বন্ধ হয়ে যায়। এমনকি সরকারি টেলিফোন সার্ভিসও মানুষের কাছে অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে। ডাকযোগে চিঠিপত্র লেখা তো প্রায় বন্ধ হয়েই গেছে। সেই থেকে এই টেলিগ্রাম ও পিসিও অফিসটি বন্ধ এবং পরিত্যক্ত হয়ে যায়। কিন্তু সরকারি স্থাপনা হিসেবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এটি সংরক্ষণ করা অপরিহার্য হলেও সেক্ষেত্রে কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। ফলে চরম অযত্ন অবহেলায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে ভবনটি এবং এর সম্পদ। এর পাশাপাশি এই টেলিগ্রাম অফিস সংলগ্ন জায়গাও বেদখল হয়ে যাওয়ারও অভিযোগ রয়েছে।

 

নিউজটি শেয়ান করুন

© All Rights Reserved © 2019
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com