শুক্রবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৯:০২ পূর্বাহ্ন

গোবিন্দগঞ্জে বিছা পোকার আক্রমণে সংকটে পাট চাষীরা

গোবিন্দগঞ্জে বিছা পোকার আক্রমণে সংকটে পাট চাষীরা

স্টাফ রিপোর্টারঃ দু’দিনের বৃষ্টিপাতে পাট পচানোর জন্য প্রয়োজনীয় পানি সংকটের কিছুটা নিরসন হলেও নতুন সমস্যায় পড়েছেন গোবিন্দগঞ্জের পাটচাষীরা। বিছা পোকা নামের শুয়োপোকা প্রজাতির একটি পোকার আক্রমণে চলতি মৌসুমে পাট নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছেন কৃষকরা। পাট পচানোর পানির সংকট কমে গেলেও নতুন সংকটের সৃষ্টি করেছে এই বিছা পোকার আক্রমণ। তবে, কৃষি বিভাগ অভয় দিয়ে জানিয়েছে, পাট কেটে নেয়ার এই শেষ সময়ে পাতা কেটে বা ছিদ্র করে তেমন কোন ক্ষতি করতে পারবে না এই বিছা পোকা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এবার দেশী পাট ১,৩,৯ জাতের পাশাপাশি ডি-১৪৪, বিজেআরআই তোষা পাট-৭, মেস্তা পাট-৩ ও জেআরও-৫২৪ জাতসহ নানা জাতের উচ্চ ফলনশীল পাটের আবাদ করেছেন কৃষক। যথেষ্ট ভালো উৎপাদন হয়েছে এসব জাতের পাটের। কিন্তু উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের পাটচাষীরা জানিয়েছেন, চলতি মৌসুমে পাট চাষের শুরু থেকেই অনাবৃষ্টিসহ নানা কারণে পাটের আবাদ আশানুরূপ হয়নি। যেটুকু পাট চাষ করা হয়েছে সে সব জমির পাট ক্ষেতে ব্যাপক ভাবে বিছা পোকার আক্রমণ দেখা দেয়ায় ফলন বিপর্যয় ঘটার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
পাট চাষীদের সূত্রে জানা গেছে, গায়ে অসংখ্য কাটা ও শক্ত মাথার শুড় ওয়ালা এই পোকা দ্রুত বংশবৃদ্ধি করে। তারা এক-দুই দিনের মধ্যে সমস্ত জমিতে ছড়িয়ে পড়ে অল্প সময়ের মধ্যে পাটের প্রায় সমস্ত পাতা কেটে ঝাঁঝড়া করে ফেলে। এই পোকার আক্রমণে পাট গাছের পাতা নষ্ট হয়ে শুকিয়ে যাওয়ায় পাটের মান খারাপ হয়ে যায়।
এ ছাড়া চলতি মৌসুমে প্রতিকুল আবহাওয়ায় উৎপাদিত পাট নিয়ে বড় বিপাকে পাট চাষীরা। বর্ষা মৌসুমেও পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় সুবিধামতো ডোবা, খাল-বিলে পানি না থাকায় পাট জাগ দিয়ে আঁশ ছাড়াতে সমস্যায় পড়তে হয়েছে তাদের। অনেক কৃষক পাট কেটে ক্ষেতেই স্তুপ করে রেখেছেন। কেউ কেউ ছোট ছোট ডোবায় একাধিক পাট জাগ দেওয়ায় উৎপাদিত পাটের মান খারাপ হচ্ছে। তবে, গত দু’দিন ধরে বৃষ্টিপাত শুরু হওয়ায় পানির সমস্যা কেটে যাওয়ার আশা করছেন তারা। কিন্তু জমিতে দাঁড়িয়ে থাকা পাট গাছে বিছা পোকার আক্রমণ শুরু হওয়ায় ফলন বিপর্যয়ে আশঙ্কা করছেন তারা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর ১৫ হাজার ৯শ’ ৮৫ হেক্টর জমিতে পাট আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করলেও চাষ হয়েছে ১৪ হাজার ৩শ’ ১৩ হেক্টর জমিতে। ফলে জেলায় পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি।
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ রেজা-ই-মাহমুদ জানান, এ সময় পাট ক্ষেতে বিছা পোকার আক্রমণে তেমন কোন ক্ষতির আশঙ্কা নেই। পাটের ভালো দাম পেতে রিবন রেটিংসহ আধুনিক পদ্ধতিতে পাটের আঁশ ছাড়ানোর তাগিদ দেওয়া হচ্ছে।

নিউজটি শেয়ান করুন

© All Rights Reserved © 2019
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com