শুক্রবার, ০২ জুন ২০২৩, ১০:৩৮ পূর্বাহ্ন
গোবিন্দগঞ্জ থেকে টুকু প্রধানঃ গোবিন্দগঞ্জে বন্যার পানি ধীর গতিতে কমতে শুরু করলেও করতোয়া নদীর পানি এখনও বিপদসীমার ১০৭ সেঃমিঃ উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গোবিন্দগঞ্জ-দিনাজপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের ৩টি অংশ বন্যার পানিতে ডুবে থাকায় ওই সড়কে ৪দিন যাবৎ যানচলাচল বন্ধ রয়েছে। অপরদিকে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বর হাঁটুপানিতে ডুবে থাকায় চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে ।
জানা গেছে, গত কয়েকদিনের টানা ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের কারণে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত করতোয়া নদীর পানি দু’কূল উপচে পড়ায় বন্যা দেখা দিয়েছে। গত এক সপ্তাহ যাবৎ বন্যায় ১টি পৌরসভাসহ উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে । এসব গ্রামের ২৬ হাজার পরিবারের প্রায় ১ লক্ষ মানুষ এখনও পানিবন্দি অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার খালেদুর রহমান জানান, বন্যার পানিতে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় ৫ হাজার ৫শ’ ৫০হেক্টর জমির রোপা আমন ধান, ২শ’ ৫০ হেক্টর জমির শাকসবজি ও ডালসহ শীতকালীন ফসল নষ্ট হয়ে গেছে।
উপজেলা মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মোট ২শ’ জন চাষীর ৬০ হেক্টর জমির ২শ’টি পুকুর উপচে গিয়ে প্রায় ৪৫ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। দরবস্ত ইউনিয়নের বাঁধ ভেঙ্গে ওই ইউনিয়নের ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বানভাসি মানুষেরা বিভিন্ন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ উচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। তারা সেখানে তাদের গরু, ছাগল, হাঁস মুরগী ও আসবাবপত্র নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। বন্যায় ডুবে থাকা অনেক এলাকার বানভাসী মানুষেরা অভিযোগে জানায়, তাদের এলাকায় এখনও কোন অফিসার বা জনপ্রতিনিধি আসেনি এবং তারা কোন ত্রাণ সামগ্রী পায়নি।
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রামকৃষ্ণ বর্মন জানান, বন্যার্ত মানুষের সহায়তার জন্য সরকারীভাবে শনিবার পর্যন্ত ৩৫ মেঃ টন চাল, নগদ ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ও ৪শ’ প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এছাড়াও পৌরসভার জন্য ৮ মেঃটন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এসব ত্রাণ-সামগ্রী বন্যার্তদের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় ইতোমধ্যে ৬টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।