শনিবার, ০৩ জুন ২০২৩, ১১:২৭ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টারঃ জেলার ব্যস্ততম গাইবান্ধা-পলাশবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কের দুই পাশে দুই বছর ধরে প্রায় চার হাজার বৈদ্যুতিক খুঁটি ফেলে রেখেছে গাইবান্ধা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। খুঁটির কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। খুঁটি সরানোর জন্য সমিতিকে চিঠি দিয়েছে গাইবান্ধা সড়ক ও জনপথ বিভাগ। চিঠি দেওয়ার প্রায় দেড় বছর পেরিয়ে গেলেও এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। গাইবান্ধা সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ সূত্র জানায়, ঢাকা-রংপুর জাতীয় মহাসড়ক থেকে গাইবান্ধা জেলা শহরের দূরত্ব ২০ কিলোমিটার। গাইবান্ধা-পলাশবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়ক ধরে জেলা শহরে ঢুকতে হয়। এ ছাড়া গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জ, সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলা সব যানবাহন এ সড়ক ধরে ঢাকা যাতায়াত করে। এ কারণে সড়কটি ব্যস্ততম সড়ক। এ সড়কের দুই পাশেই খুঁটিগুলো রাখা।
গত রোববার দুপুরে সরেজমিন দেখা গেছে, সদর উপজেলার সাহাপাড়া ইউনিয়নের তুলসীঘাট বাজারের পাশে অবস্থিত গাইবান্ধা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কার্যালয়। সদর উপজেলার মধুপুর এলাকা থেকে সমিতির কার্যালয়ের পূর্ব-পশ্চিমে প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে খুঁটি ফেলে রাখা হয়েছে।
বিশেষত একই উপজেলার মধুপুর এলাকায় অবস্থিত জেলা যুব উন্নয়ন কার্যালয়ের সামনে, তুলসীঘাট হেলিপ্যাডের সামনে, তুলসীঘাট কবরস্থান ও গ্রামীণ ব্যাংকের সামনে এবং তুলসীঘাট বাফার সার গুদামের সামনে মহাসড়ক ঘেঁষে এসব খুঁটি রাখা হয়েছে।
সদর উপজেলার তুলসীঘাট গ্রামের রিকশাচালক বাবলু মিয়া (৪৫) বলেন, এ আসতা দিয়া হামরা এ্যাকসা চলাই। যকন দুইটে বাস একসাতে আইসে, তকন খুঁটির জন্য আস্তার পাশে দাঁড়ান যায় না। কয় দিন আগোত বাসোক সাইট দিব্যার যায়া উরটি পরি আগাত (আহত) পাচি।
একই গ্রামের অটোরিকশাচালক আইজল মিয়া (৫৫) বলেন, এসব খুঁটি রাখায় ফুটপাত বন্ধ হয়ে গেছে। সকাল-সন্ধ্যায় এ সড়কে যানজট বেশি হয়। সে সময় বেশি ঝামেলা হয়। কারণ, খুঁটির কারণে লোকজন সড়কের পাশ দিয়ে হাঁটা চলা করেন।
টেংগরজানি গ্রামের কলেজছাত্র মেহেদী হাসান বলেন, ব্যস্ততম এ মহাসড়কের ফুটপাত দখল করে খুঁটি রাখায় পথচারীরা দুর্ঘটনার ঝুঁকিতে পড়েছেন। বিশেষত স্কুল-কলেজগামী শিশু শিক্ষার্থীরা হেঁটে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে পারছে না।
এলাকার লোকজন আরও বলেন, খুঁটি ট্রাকে ওঠা-নামার সময় মহাসড়কের অর্ধেকের বেশি দখল হয়ে থাকে। এতে সড়ক নিরাপত্তা বিঘিœত হচ্ছে। পাশাপাশি এসব এলাকায় যানজট লেগেই থাকে। ফলে যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
গাইবান্ধা সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ ফিরোজ আখতার বলেন, গত বছরের ২৫ মার্চ আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশ থেকে বৈদ্যুতিক খুঁটি অপসারণের জন্য পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে চিঠি দেওয়া হয়।
অন্যথায় বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। চিঠি দেওয়ার এক বছর চার মাস পেরিয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত খুঁটি সরানো হয়নি। এ ছাড়া জেলা সমন্বয় কমিটির সভায় একাধিকবার বিষয়টি উপস্থাপন করা হয়।
গাইবান্ধা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক শেখ মানোয়ার মোরশেদ বলেন, মহাসড়কের পাশ থেকে খুঁটি সরানোর বিষয়ে কোনো চিঠি তিনি পাননি। তবে সমিতির ভাড়া করা জমিতেই খুঁটি রাখা আছে। এখান থেকে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারেরা ট্রাকে ওঠানোর সুবিধার্থে সড়কের পাশে খুঁটি রেখেছেন। তাঁদের মহাসড়কের পাশ থেকে খুঁটি সরাতে তাগাদা দেওয়া হচ্ছে।