মঙ্গলবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৮:৫৩ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টারঃ গাইবান্ধা জেলা শহর, সদর উপজেলার তুলশীঘাট, কামারজানি, দারিয়াপুর, লক্ষীপুর, বাদীয়াখালী সহ গাইবান্ধা জেলার ৭ উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারসহ অলিগলিতে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি আকারের সহস্রাধিক ফার্মেসি বা ওষুধের দোকান। ৬০ থেকে ৭০টি রয়েছে শহরে লাইসেন্সবিহীন ঔষধের দোকান।
ঔষধ প্রশাসনের নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে গাইবান্ধা জেলা শহরসহ বিভিন্ন উপজেলার হাট- বাজারে অনেকেই ফার্মেসি দিয়ে বসেছেন ওষুধ বিক্রির ব্যবসায়। এসব ফার্মেসিগুলোয় চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া বা ব্যবস্থাপত্রে উল্লেখিত মেডিসিন না দিয়ে বিক্রয় করছে ভিন্ন মেডিসিন (ঔষধ) যেমন উচ্চমাত্রার অ্যান্টিবায়োটিক, নিষিদ্ধ, ভারতীয়, নকল, মেয়াদোত্তীর্ণ ও নিম্নমানের নানা ধরনের ওষুধ বিক্রি করছে অবাধে। এ ছাড়া নেই কোনো প্রশিক্ষিত ফার্মাসিস্ট।
গাইবান্ধার বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে- গাইবান্ধা জেলা শহরসহ জেলার ৭ উপজেলার হাটবাজার সহ বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে মোড়ে গড়ে উঠেছে প্রশিক্ষণ ছাড়া ও ড্রাগ লাইসেন্সবিহীন শত শত ফার্মেসি। ফলে সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত অপচিকিৎসার শিকার হচ্ছেন। বিশেষ করে সদর হাসপাতাল রোড, পালস ক্লিনিক ও এস,কেএস হসপিটালের সামনে, ভিএইড রোডে কয়েকটি লাইসেন্সবিহীন ঔষধের দোকান রয়েছে। গাইবান্ধার ডাক্তারদের কাছে ভিজিটের কারণে অনেকে জ্বর সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হলে এলাকার শিশু, বৃদ্ধ, যুবক, অন্তঃসত্ত্বারা ভিজিটের কারনে চিকিৎসকের কাছে আসেন না। তারা তাদের পার্শ্ববর্তী ফার্মেসির শরণাপন্ন হয়ে রোগের বর্ণনা দিয়ে ওষুধ নেন। এ সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছে ফার্মেসিগুলো। গাইবান্ধা শহরসহ সদরের তুলশীঘাট, কামারজানি- পলাশবাড়ী, সাদুল্যাপুর, সাঘাটা, ফুলছড়ি, সুন্দরগঞ্জ ও গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার ও মোড়ে কয়েক শতাধিক ফার্মেসির ড্রাগ লাইসেন্স ও ফার্মেসির প্রশিক্ষণ নেই।
ফার্মেসিগুলোয় চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই উচ্চমাত্রায় এজিথ্রোমাইসিন অ্যান্টিবায়োটিক, ঘুমের বড়ি ও যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট, নিষিদ্ধ, ভারতীয়, নকল, মেয়াদোত্তীর্ণ ও নিম্নমানের নানা ধরনের ওষুধ অবাধে বিক্রি করে আসছে। ফলে একদিকে যেমন ওষুধ ব্যবসায়ীরা হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। অন্যদিকে সাধারণ ক্রেতারা প্রতারিত হওয়ার পাশাপাশি বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। ওষুধ নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৪০ অনুসারে কারও ওষুধের দোকান বা ফার্মেসি দেওয়ার ক্ষেত্রে তাকে নিম্নতম এইচএসসি পাশ করে প্রথমেই কমপক্ষে ছয় মাসের ফার্মাসিস্ট কোর্স করে সনদ সংগ্রহ করতে হবে। পরে সংশ্নিষ্ট ড্রাগ সুপারের কার্যালয়ে ফার্মাসিস্ট সনদ জমা দিয়ে ড্রাগ লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে হয়। ড্রাগ নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ ১৯৮২-এর ৪ নম্বরের ১৩ নম্বর ধারায় ‘ফার্মাসিস্টদের নিয়োগ’ শিরোনামে উল্লেখ আছে, কোনো খুচরা বিক্রেতা বাংলাদেশ ফার্মেসি কাউন্সিলের কোনো রেজিস্ট্রারের রেজিস্ট্রিভুক্ত ফার্মাসিস্টদের তত্ত্বাবধান ব্যতিরেকে কোনো ড্রাগ বিক্রি করতে পারবে না। কিন্তু এ নিয়মের তোয়াক্কা না করেই ওষুধ বিক্রি হচ্ছে এসব ফার্মেসিতে।