সোমবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৩:১১ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টারঃ গাইবান্ধায় এবার রবি মৌসুমে সরিষার ব্যাপক চাষ হয়েছে। ইতোমধ্যে জেলার প্রতিটি মাঠে শুরু হয়েছে সরিষা কাটা-মাড়াই। এই বছর আবহাওয়া অনূকুলে থাকায় এ উপজেলায় সরিষার বাম্পার ফলন হয়েছে। এছাড়াও দাম ভালো পাওয়ায় খুশি কৃষকরা।
আমন ধান কাটার পর এই অঞ্চলের কৃষকরা বাড়তি ফসল হিসেবে সরিষা চাষ করে থাকে। সরিষা বিক্রি করে যে টাকা পায় ঐ টাকা দিয়ে আবার ইরি বোরো মৌসুমে ধান রোপন করা হয়।
ভোজ্যতেলের আকাশচুম্বী দাম থেকে রেহাই পেতে এবং অধিক লাভের আশায় এ বছরে গাইবান্ধার কৃষকরা সরিষা আবাদে আগ্রহ দেখিয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবার বেশি পরিমাণ জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন তারা। এতে প্রায় ২৩ হাজার ৪০৮ মেট্রিকটন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ।
দুটি ফসলের মাঝে কৃষকরা সরিষা চাষের ফলনকে বোনাস হিসেবে দেখছেন। সরিষা কেটে ওই জমিতে আবার বোরো আবাদ করা যায়। এতে কৃষি জমির সর্বাধিক ব্যবহার নিশ্চিত হয়। একসময় কৃষকরা আমন ধান কাটার পর জমি পতিত ফেলে রাখতো। সময়ের সাথে সাথে তা পুরোটাই পাল্টে গেছে। আমন ধান কাটার পর জমিতে সরিষা লাগাতে হয়। যা মাত্র ৭০ থেকে ৮০ দিনের মধ্যে ফসল কৃষক ঘরে তুলতে পারেন।
গাইবান্ধা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত বছরে ১০ হাজার ১১৫ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়। এতে উৎপাদন হয়েছিল ১৪ হাজার ৬৬৭ মেট্রিকটন। আর এ বছরে ভোজ্যতেলের বাজার অস্থিতিশীল থাকায় এবং সরকারি প্রণোদনা পাওয়ার বেশি পরিমাণ জমিতে সরিষার আবাদ করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে জেলার ৭ উপজেলায় ১৫ হাজার ২০০ হেক্টর আবাদ থেকে প্রায় ২৩ হাজার ৪০৮ মেট্রিকটন সরিষা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ। গাইবান্ধা সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের কৃষক শাকিল মন্ডল জানান, কৃষি অফিসের সহযোগিতায় দেড় বিঘা জমিতে বারি-১৭ জাতের সরিষা আবাদ করেছেন তিনি। এতে ২ কেজি বীজ বপন করেন। ইতোমধ্যে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখছেন। আর কয়েকদিন পরই এই ফসল ঘরে তুলবেন। এতে প্রায় ৯ মণ সরিষা পাবেন বলে আশা করছেন তিনি।তিনি বলেন, আগে কখনও সরিষার আবাদ করিনি। ইদানিং ভোজ্যতেলের দাম বেশি হওয়ার কারণে এবং কৃষি অফিসের নগদ টাকা, সার-বীজ সহায়তা পেয়ে এই আবাদ করেছি। এতে প্রায় ৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বর্তমান বাজারে প্রতিমণ কাঁচা সরিষা ২৪০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ফলে বেশ লাভবান হবো।
গাইবান্ধা সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা তানজিমুল হাসান বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছরে অধিক পরিমাণ জমিতে বিভিন্ন জাতের সরিষার আবাদ হয়েছে। কৃষকদের লাভবান করতে ইতোমধ্যে প্রণোদনা দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে তাদের সার্বিক পরামর্শও দেওয়া হচ্ছে।