মঙ্গলবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৯:৩৬ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টারঃ গত কয়েদিন আগে গাইবান্ধায় বৃষ্টি ও উজানের ঢলে সবগুলো নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পায় ফলে জেলার ৭টি উপজেলায় প্রায় ৬০১ হেক্টর ফসলি জমি বন্যাক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে রোপা আমন ৫৫৭ হেক্টর, শাক-সবজি ৪০ হেক্টর, বীজতলা ৩ হেক্টর ও পেঁয়াজ রয়েছে ১ হেক্টর। এসব জমির ফসলহানীর শঙ্কায় দুশ্চিন্তায় পড়ছেন প্রান্তিক কৃষকরা।
গত ৩০ আগস্ট দুপুরে গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর থেকে এ তথ্য জানানো হয়। তবে ওইসব ফসলি ক্ষেত পানিতে নিমজ্জিত হলেও এখনো ফসলহানী হয়নি। ওই দফতরটি সুত্রে জানা যায়, চলতি মাসের ২৬ আগস্ট পর্যন্ত বৃষ্টি ও উজানের ঢলের কারণে সৃষ্ট বন্যায় সদর উপজেলায় রোপা আমন ও শাক-সবজি ৫৪ হেক্টর, সাদুল্লাপুরে ৭৫ হেক্টর, পলাশবাড়ীতে ১২৫ হেক্টর, সুন্দরগঞ্জে ২১৬ হেক্টর, সাঘাটায় ১০৪ হেক্টর ও ফুলছড়ি উপজেলায় ২৭ হেক্টর ফসলি জমি পানিতে তলিয়েছে।
এদিকে, স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, নদীবেষ্টিত গাইবান্ধা জেলায় প্রত্যেক বছরে বয়ে যায় বন্যা। গত কয়েদিন আগে গাইবান্ধায় অতিবৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে সবগুলো নদ-নদীর পানি বাড়তে থাকে। এরই মধ্যে নদীর তীরবর্তী ও নিম্নাঞ্চল এলাকাগুলো বন্যা আক্রান্ত হয়। এ বছর কয়েক দফায় চরাঞ্চলসহ নিম্নাঞ্চলে বন্যা দেখা দেয়। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার বন্যায় তেমন কোন স্থায়ীত্ব ছিলো না। ইতোমধ্যে পানি কমছে শুরু করেছে। বিদ্যমান পরিস্থিতি জেলায় প্রায় সহস্রাধিক হেক্টর ফসলি জমি বন্যাক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে কিছু সংখ্যক জমির ফসলহানী হয়েছে বলে জানা গেছে।
সুন্দরগঞ্জের কৃষক মেহেদুল ইসলাম বলেন, এ বছর খরার ধকল সামলিয়ে দেড় একর জমিতে সেচ দিয়ে রোপা আমন চারা রোপণ করছিলাম। সম্প্রতি বন্যায় প্রায় একবিঘা জমির ক্ষেত পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। সম্পন্ন ফসলহানী না হলেও উৎপাদন হবে কম। এনিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছি।
ফুলছড়ির কৃষক এন্তাজ আলী জানান, কৃষি ফসল উৎপাদন করেই জীবিকা নির্বাহ করেন। এ বছরে বন্যায় প্লাবিত হয়ে রোপা আমন ও শাক-সবজিসহ তার দুই বিঘা জমি পানিতে ডুবে গেছে। এতোমধ্যে সেগুলো ভাসতে শুরু করছে। এতে করে আশানুরূপ ফলন না পেতে পারেন তিনি।
আরেক কৃষক নজরুল ইসলাম বলেন, পানিতে নিমজ্জিত হয়ে বিস্তীর্ণ ফসলি জমির ফসল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছি। কাঙ্খিত ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে বীজ-সার ও শ্রমিকের খরচ ব্যয় করে অর্থ সংকটে পড়েছি। এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকারের প্রণোদনা দাবি করছি।
এ বিষয়ে গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক খোরশেদ আলম বলেন, গত কয়েকদিন আগে বন্যাক্রান্ত হওয়া কৃষকদের খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। সেই সাথে তাদের যেন ফসলহানী না হয় সে ব্যাপারে সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে।