সোমবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৯:৫৪ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টারঃ গাইবান্ধায় চলছে দুদিনের পরিবহন ধর্মঘট। গতকাল শুক্রবার ভোর ৬টা থেকে শুরু হওয়া এ ধর্মঘট চলবে আজ শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। গতকাল শুক্রবার ভোর থেকেই গাইবান্ধা কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনাল থেকে রংপুর ও বগুড়া রুটের বাসগুলো চলাচল বন্ধ রেখেছে মালিক-শ্রমিক ইউনিয়ন। ওই দুই রুটের কোন বাস গাইবান্ধা টার্মিনাল থেকে ছেড়ে যায়নি এবং আসেওনি। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।
গাইবান্ধা জেলা বাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আশরাফুল ইসলাম বাদশা জানান, রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের মালিক ও শ্রমিক ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দের নির্দেশে বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে গাড়ি ভাঙচুর ও নিরাপত্তার আশঙ্কায় রংপুর ও বগুড়া রুটের সব বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ দক্ষিণাঞ্চলের দূরপাল্লার বাস চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
এদিকে বাস ধর্মঘটে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা। অনেকে পূর্ব নির্ধারিত গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে না পেরে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। ফুলছড়ির চরাঞ্চল থেকে রংপুরে চিকিৎসার জন্য যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে গাইবান্ধা বাস টার্মিনালে আসা যাত্রী রহমতউন্নবী সরদার বলেন, গতকাল শুক্রবার বিকেলে তার স্ত্রীকে ডাক্তার দেখানোর জন্য সিরিয়াল পেয়েছেন তিনি। কিন্তু ফজরের নামাজ পড়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে নৌকাযোগে যমুনা নদ পার হওয়ার পর সিএনজিতে করে গাইবান্ধা বাস টার্মিনালে আসেন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে। কিন্তু রংপুরের বাস চলাচল বন্ধ থাকায় তিনি গুরুতর অসুস্থ রোগীকে নিয়ে বিপাকে পড়েন। দুপুর ১২টা পর্যন্ত অপেক্ষা করার পর তিনি বাধ্য হয়েই বাড়ি ফিরে যান।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলার শ্রীপুর থেকে থেকে নীলফামারীর উদ্দেশ্যে ছেলে-মেয়ে নিয়ে রওনা দেওয়া আছিয়া বেগম বলেন, নীলফামারীর ডিমলায় তিনি শ্বশুরবাড়িতে যাচ্ছিলেন। কিন্তু বাস না পেয়ে গাইবান্ধা বাস টার্মিনাল থেকে তিনি পুনরায় বাবার বাড়ি ফেরত যাচ্ছেন।
অপরদিকে হঠাৎ বাস বন্ধ হওয়ায় দৈনিক মজুরিতে কর্মরত শ্রমিকরা পড়েছেন বিপাকে। অনেকের বাড়িতে চুলা জ্বলার মতো অবস্থা নেই বলেও মন্তব্য করেছেন বেশকিছু মোটর শ্রমিক।
গাইবান্ধা জেলা মটর মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নাজিবুল আমিন নান্নু বলেন, মহাসড়কে হয়রানি, অটো ও সিএনজি চলাচল বন্ধের দাবিতে রংপুর জেলা মোটর মালিক ও শ্রকিদের ডাকা ধর্মঘটের কারণে গাইবান্ধাতেও বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। আজ শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বাস চলাচল বন্ধ থাকার কথা রয়েছে।
এদিকে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মোশাররফ হোসেন বাবু রাস্তাঘাটে কোথাও কোনো বাধা নেই উল্লেখ করে বলেন, কী কারণে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে তা সকলেরই জানা। বিএনপির নেতাকর্মীদের অনেকে বাসের অপেক্ষায় না থেকে বিকল্প পথে ইতোমধ্যে রংপুর পৌঁছে গেছেন। গতকাল শুক্রবারও মোটর সাইকেল, অটো, সিএনজি এমনকি পায়ে হেঁটেও অনেকে রংপুরের মহাসমাবেশ স্থলের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। আজ শনিবার জনসমুদ্রে পরিণত হবে রংপুর।