শুক্রবার, ৩১ মার্চ ২০২৩, ০৮:৪৩ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম
শিক্ষা ব্যাবস্থা উন্নত আধুনিক ও শিক্ষার মান উন্নয়নের কৃতিত্ব একমাত্র প্রধানমন্ত্রীর -মাহমুদ হাসান রিপন এমপি সুন্দরগঞ্জে সাব প্রাণী সম্পদ কল্যাণ কেন্দ্রের বেহালদশাঃ গ্রাম গঞ্জে পশু ডাক্তারের নামে হাতুড়ে ডাক্তারের ছড়াছড়ি গাইবান্ধায় আওয়ামীলীগের ঐতিহাসিক ৭ ই মার্চ উদযাপন সাঘাটায় রেকর্ডভুক্ত জমিতে ব্রীজ নিমার্ণ কাজে বাধাঁ প্রদান করায় ঠিকাদার কর্তৃক থানায় অভিযোগ কলেজপাড়ায় পৌর নাগরিকদের সভা নলডাঙ্গায় নবীন ও বসন্ত বরণ অনুষ্ঠান গাইবান্ধায় স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে মতবিনিময় সভা গাইবান্ধায় মহিলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন গোবিন্দগঞ্জে সরকারি বই বিক্রিকালে জনতার হাতে শিক্ষক-কর্মচারী আটক দারিয়াপুরে বাম জোটের সমাবেশ অনুষ্ঠিত

সাদুল্লাপুরে প্রতিবন্ধীর ভাগ্যে জুটেনি হুইল চেয়ার

সাদুল্লাপুরে প্রতিবন্ধীর ভাগ্যে জুটেনি হুইল চেয়ার

সাদুল্লাপুর প্রতিনিধিঃ ভিক্ষুক কোহিনুর বেগম (৫৫)। দুই পা বিকলাঙ্গ। চলাফেরায় দুই হাতই ভরসা। হাতের ওপর ভর করে পেটের দায়ে ছুটতে হয় এদিক-সেদিক। এই দুর্ভোগ থেকে রেহাই পেতে হুইল চেয়ারের স্বপ্ন দীর্ঘ দিনের। কিন্তু সেটি কেনার সামর্থ নেই। এটির জন্য ঘুরেছেন বিভিন্ন জিও-এনজিও সংস্থায়। এছাড়াও দ্বারে দ্বারে পৌঁছেছেন বিত্ত্ববান ও জনপ্রতিনিধিদের নিকট। কিন্তু তার ভাগ্যে আজও জুটেনি একটি হুইল চেয়ার।
গতকাল শনিবার দুপুরে বাড়ি সামনে হাতের ওপর ভর করে চলতে দেখা যায় তাকে। এসময় ছবি তুলতে গিয়ে হাউমাউ করে কেঁদে উঠলেন কোহিনুর। এই প্রতিবন্ধী কোহিনুরের বাড়ি গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের বিষ্ণপুর গ্রামে। এ গ্রামের মৃত ইউসুফ ব্যাপারীর মেয়ে।
জানা যায়, কোহিনুরের বয়স যখন ৭, তখন মারা যায় পিতা ইউসুফ ব্যাপারী। জীবদ্দশায় এই পিতা ছিলেন একজন দিনমজুর। সহায় সম্পদ হিসেবে ৩ শতক জমিতে রয়েছে বসতবাড়ি। পিতার মৃত্যুর পর মাতা আমেনা বেগমের সংসারে নেমে আসে অন্ধকার। জীবিকার তাগিদে আমেনা বেগম বেছে নেয় ভিক্ষাবৃত্তি। এরই মধ্যে বড় হয়ে উঠে কোহিনুর। প্রায় ৩৫ বছর আগে দিনাজপুর জেলায় বিয়ে হয় কোহিনুরের। সেখানে কয়েক বছর ঘর সংসার করাকালে স্বামী মুংলু মিয়া তালাক দেয়। এরপর বাবার বাড়িতে আশ্রয় নেয় মায়ের সঙ্গে। দুমঠো অন্ন যোগাতে ঘুরতে হচ্ছে অন্যের দুয়ারে দুয়ারে। সারাদিন ঘুরে মাসহ দুজন মিলে যেটুকু পান এ দিয়ে কোনমতে জীবিকা নির্বাহ তাদের।
ধারাবাহিকতায় গত ৪ বছর আগে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে কোহিনুর। এসময় সঠিক চিকিৎসার অভাবে তার দুটি পা বিকলাঙ্গ হয়ে যায়। তখন থেকে প্রতিবন্ধী জীবনে দুই হাতে ভর করে এবং ঘোস পেরে চলাচল করতে হচ্ছে কোহিনুরকে। এভাবেই পেটের দায়ে ছুটতে হচ্ছে মানুষের বাড়িতে। সম্প্রতি মা আমেনা বেওয়াও বয়সের ভারে ন্যুয়ে পড়েছে। বর্তমানে মা-মেয়ের শরীরে নানা রোগের বাসা বেঁধেছে। ওষুধ কিনে খেয়ে সুস্থ হবেন, এমন টাকাও নেই তাদের। নুন আন্তে পান্থা ফুরায় অবস্থা। যেন মড়ার ওপর খাড়ার ঘাঁ। একেবারই থমকে গেছে তাদের জীবন-জীবিকা।
বিদ্যমান পরিস্থিতে একটি হুইল চেয়ারের প্রয়োজন কোহিনুরের। কিন্তু এই চেয়ার কেনার সামর্থও নেই। এটি পেতে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও তার ভাগ্যে জোটেনি একই হুইল চেয়ার।
স্থানীয় বাসিন্দা আবুল হোসেন বলেন, প্রতিবন্ধী কোহিনুর ও তার মা আমেনা অতিকষ্টে দিনাতিপাত করছে। তাদের কষ্ট দেখলে নিজেরও কষ্ট হয়। এই পরিবারটির জন্য কেউ সহযোগিতা করলে শেষ বয়সে কিছুটা হলেও শান্তি পাবেন তারা।
কান্না জড়িত কণ্ঠে প্রতিবন্ধী কোহিনুর বেগম জানান, অকেজো দুটি পা তার। স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারেন না। এ কারণে দুই হাতে ভর করে চলতে হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, একটি হুইল চেয়ার পাওয়ার জন্য ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে অনেক ঘোরাঘুরি করেছি। এছাড়া আরও অনেক জায়গায় ঘুরেছি। সবাই হুইল চেয়ার দিতে চাইছিলেন কিন্তু এখনো কেউই দেয়নি।
এ বিষয়ে ফরিদপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান নুর আজম ম-ল নীরব বলেন, কোহিনুরকে একটি হুইল চেয়ার দেওয়ার চেষ্টা করা হবে।

নিউজটি শেয়ান করুন

© All Rights Reserved © 2019
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com