মঙ্গলবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:২৩ অপরাহ্ন

গাইবান্ধায় দেড় মাসে প্রাণ হারিয়েছেন ৫ জনঃ তুচ্ছ ঘটনায় বাড়ছে খুনের ঘটনা

গাইবান্ধায় দেড় মাসে প্রাণ হারিয়েছেন ৫ জনঃ তুচ্ছ ঘটনায় বাড়ছে খুনের ঘটনা

স্টাফ রিপোর্টারঃ হঠাৎ করেই বেড়েছে নৃশংস খুনের ঘটনা। তুচ্ছ ঘটনায় বীভৎস কায়দায় খুন করা হচ্ছে একের পর এক। সুদের টাকা, মিষ্টি বিক্রি, আম বিক্রি, মোটরসাইকেলে গতির প্রতিযোগিতাসহ জমি জমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে গাইবান্ধায় সাম্প্রতিক সময়ে মাত্র দেড় মাসে এসব তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৫ জন । একের পর এক নৃশংস খুনের ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে জনমনে। চাঞ্চল্যকর এসব ঘটনায় জড়িত আসামিদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গ্রেফতার না করতে পারায় উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা কমছে না। গত দেড় মাসে বিভিন্ন ঘটনায় প্রাণ হারানো ৫ জনের সবাই পুরুষ । এদের মধ্যে দুইজন ছিলেন ক্ষমতাসীন দলের রাজনৈতিক নেতা ও বাকি দুইজন ছিলেন ব্যবসায়ী । এই পাঁচটি হত্যাকা-ের চারটি ঘটেছে গাইবান্ধা সদর উপজেলায় এবং ১ টি পলাশবাড়ী উপজেলায় ।জানা গেছে, গত ১০ এপ্রিল সুদের টাকাকে কেন্দ্র করে গাইবান্ধা শহরের ষ্টেশন রোডের আফজাল সুজের সাবেক মালিক পাদুকা ব্যবসায়ী হাসান আলীকে দাদন ব্যবসায়ী বল্লমঝাড়ের মাসুদ রানা তার নিজ বাড়ীতে আটক রেখে নির্মমভাবে হত্যা করেন। এ ঘটনায় দাদন ব্যবসায়ী মাসুদ রানাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গত ১৬ জুন গাইবান্ধা সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের হাসপাতাল বালুয়া বাজারে মিষ্টি বিক্রিকে কেন্দ্র মাদকাসক্ত ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা সোহেল ও তার ছোট ভাই সোহানের ছুরিকাঘাতে নিহত হয় ভগবানপুর গ্রামের রোকন সরদার নামে এক ব্যবসায়ী এবং গুরুতর আহত হয় জিল্লুর রহমান নামে অন্য আরেক ব্যবসায়ী । এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত মামলার প্রধান আসামিকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ ।
এরপর গত ১১ জুলাই রাতে মোটর সাইকেলে গতির প্রতিযোগিতাকে কেন্দ্র করে কাঞ্চন নামে এক যুবককের ছুরিকাঘাতে জেলা শহরের পূর্বপাড়ার হালিম বিড়ি ফ্যাক্টরির সামনে ফুলছড়ি উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান রকি নিহত হয়। এ সময় ছুরিকাঘাতে রকির দুই বন্ধু আহত হন। এঘটনায় কাঞ্চনকে প্রধান আসামি ও ৮ জনকে অজ্ঞাত করে মামলা দায়ের করলেও প্রধান আসামি ও তার সহযোগীদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি । গত ৪ আগস্ট আম কেনাকে কেন্দ্র করে গাইবান্ধা জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম লিখন নিহত হয় । জানা যায় ঘটনার দিন দুপুরে হকার্স মার্কেটের পাশের রাস্তায় ডেভিড কোম্পানি পাড়ার শরিফের দোকানে আম কিনতে যায় লিখন । আম কেনার সময় শরীফের সাথে কথাকাটাকাটি হয় লিখনের। পরে লিখন বাড়িতে আম রেখে এসে শরীফের সাথে সামান্য হাতাহাতি হলে স্থানীয়রা উভয় পক্ষের মধ্যে সমঝোতা করে দেয়। এরপর ঐ দিন রাতে লিখন জেলা বিএনপি অফিসের সামনে গেলে শরীফসহ আরও কয়েকজন মিলে লিখনকে মারপিট করে। এতে গুরুতর আহত হয় লিখন। পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় প্রধান আসামি রক্সিসহ তিন জনকে আটক করেছে পুলিশ ।
এরপর সবশেষ গত ৬ আগষ্ট পলাশবাড়ী উপজেলার বেতকাপা ইউনিয়নের মোস্তফাপুর গ্রামে বিকেলে জমি চাষ দেয়া নিয়ে ওই গ্রামের রেজাউল ইসলাম ও সাগর মিয়ার মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। রাতে দুপক্ষ ধারালো অস্ত্র ও লাঠিশোঠা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে । এসময় আনছার সদস্য ছামিউল ইলাম সংঘর্ষ থামাতে গেলে রেজাউল ইসলামের লোকজন ছামিউল ইসলামকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। পরে অবস্থার অবনতি হলে ছামিউল ইসলামকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিৎিসাধীন ছামিউল ইসলামের মৃত্যু হয়। এঘটনায় এজাহারভুক্ত তিন আসামিকে গ্রেফতার করে পুলিশ ।

নিউজটি শেয়ান করুন

© All Rights Reserved © 2019
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com