শুক্রবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৮:২০ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টারঃ গাইবান্ধায় দফায় দফায় বাড়ছে ভোগ্যপণ্যের দাম। লাগামহীন দাম বৃদ্ধিতে বেকায়দায় পড়েছে মধ্যবিত্ত ও নিম্নআয়ের মানুষ। বিভিন্ন জিনিসপত্রের ক্রয় ক্ষমতা তাদের নাগালের বাইরে চলে গেছে। সংসার চালানোই এখন বড় দায়। এতে সাধারণ ভোক্তাদের মধ্যে শুরু হয়েছে বোবা কান্না আর হাহাকার।
সম্প্রতি গাইবান্ধা শহরের পুরাতন বাজারসহ বিভিন্ন হাট-বাজারে দেখা গেছে খাদ্যপণ্যের অস্বাভাবিক দামের চিত্র। এর প্রভাবে অস্থির হয়ে উঠেছে মধ্যবিত্ত ও খেটে খাওয়া মানুষ।
বর্তমান বাজারে প্রতিকেজি কাঁচা মরিচ ২০০ টাকা, বেগুন ৪০ থেকে ৭০ টাকা, তরই ৫০ টাকা, মুলা ৪০ টাকা, কাকরোল ৫০ টাকা, বটবটি ৬০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, শসা ৫০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, মুখিকচু ৬০ টাকা, আলু ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, পেঁপেঁ ৩০ টাকা ও পেঁয়াজ ৭০ থেকে ৮০ টাকা ও ডিম প্রতিপিস ১৪ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। অথচ গত একসপ্তাহ আগে এসব পণ্যের দাম অনেকটাই কম ছিল। এরই মধ্যে লাফিয়ে বেড়ে এই ভোগ্যপণ্যের দাম। তবে ব্রয়লার মুরগি, চাল, মাছ, সোয়াবিন তেল, ডাল ও অন্যান্য মসলাসহ নিত্যপণ্যের দাম গত এক সপ্তাহে কিছুটা কমেছে।
জানা যায়, উত্তর জনপদের জেলা গাইবান্ধা। একসময় এ জেলাটি মঙ্গা পীড়িত হিসেবে পরিচিত ছিল। এই মঙ্গা দূরীকরণে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী আয়বৃদ্ধিমূলক কর্মকা- বাস্তবায়নে সেই মঙ্গা নামটি ঘুঁচিয়ে স্বচ্ছলতা ফিরেছে সকল পেশা-শেণির মানুষের। এরই মধ্যে করোনা, বন্যা, খরাসহ নানা ধরণের দুর্যোগে কবলে আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি হওয়ায় আবার যেন সেই মঙ্গার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে ভোগ্যপণ্যের অস্বাভাবিক দামে সাধারণ মানুষের মধ্যে ফের শুরু হয়েছে নিরব দুর্ভিক্ষ।
এদিকে, নদীবেষ্টিত গাইবান্ধায় বন্যা-ভাঙনসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেন নিত্যসঙ্গী। এরপ্রভাবে মধ্যবিত্ত ও স্বল্প আয়ের পরিবারগুলো চরম আর্থিক সংকটে পড়েছে। ইতোমধ্যে মধ্যে হু হু করে বেড়ে চলেছে ভোগ্যপণ্য কিংবা নিত্যপণ্য ও বিভিন্ন জিনিসিপত্রের দাম। এমন দামের কারণে একেবারই বেসামাল সাধারণ মানুষেরা। দিনদিন তাদের ব্যয় বাড়লেও, বাড়ছে না আয়-রোজগার। ফলে সংসার চলাতে হাঁসফাঁস অবস্থা হয়ে উঠেছে তাদের।
বিদ্যমান পরিস্থিতি সামাল দিতে ছিন্নমূল পরিবারের অনেকে বেঁছে নিয়েছে ভিক্ষাবৃত্তি ও চুরি-চামারি কার্যকলাপ। সম্প্রতি শহর-হাট-বাজারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে দিনেদুপুরে টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনাও ঘটেছে। সেই সঙ্গে মানুষের এই অভাব অনটনকে পুঁজি করে ফুঁসে উঠেছে স্থানীয় দাদনেরা। বিভিন্ন পরিবারের লোকজন তাদের দায়ভার সারতে তাদের কাছে ধরনা দিচ্ছে। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে দাদন ব্যবসায়ীরা চড়া সুদ গ্রহণ করছে।
এমতাবস্থায় সাধারণ মানুষের জীবনযাপনে প্রচ- আঘাত হানতে শুরু করেছে। অধিক দামে পণ্যসামগ্রী কেনা ভুক্তভোগিদের বোবা কান্না যেন দেখার কেউ নেই। অস্থির এই বাজার নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্টদের সঠিক তদারকি না থাকলে সাধারণ মানষ আরও বেকায়দায় পড়তে পারে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।