সোমবার, ২৭ মার্চ ২০২৩, ০৭:২০ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টারঃ গাইবান্ধার দিগন্ত মাঠজুড়ে শুরু হয়েছে বোরো চারা রোপনের কাজ। এ লক্ষ্যে জমে ওঠেছে ধানের চারা কেনা-বেচার হাট। অনেক কৃষক হাটে গিয়ে বিক্রি করছেন চারা। আবার কেউ কেউ চারা সঙ্কটে ছুটছে এই হাটে। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়েছে দালালদের একটি চক্র। ক্রেতা-বিক্রেতাকে ফাঁদে ফেলে কৌশলে হাতিয়ে নিচ্ছে নগদ টাকা। এদের খপ্পরে পড়ে ঠকছেন হাটে আসা কৃষকরা।
সরেজমিনে গাইবান্ধার দাড়িয়াপুর, ভরতখালী, সাদুল্লাপুর, মীরপুর ও নলডাঙ্গা হাটে গিয়ে দেখা গেছে, বোরো ধানচারা ক্রয়-বিক্রয়ের চিত্র। এসময় বেশ কিছু দালাল কৃষকদের কেনা-বেচা করে দেওয়ার নামে পকেটস্থ করছে টাকা। এসব দালালের উৎপাতে চরম বিপাকে পড়ছে চারা ক্রেতা-বিক্রেতারা। তাদের অভিযোগ হাটে আসা মাত্রই ধমক দিয়ে ধানের চারা কেনা-বেচার দায়িত্ব নেওয়ার নামে টাকা গ্রহণ করেছে একদল দালাল।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত মাসে তীব্র শীত আর ঘন কুয়াশায় গাইবান্ধা জেলার বেশ কিছু বোরো বীজ তলা নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে চারা সঙ্কটে পড়েছেন কৃষকরা। হাটে ধানের চারা পাওয়া গেলেও তা কিনতে হচ্ছে বেশি দামে। বিশেষ করে বিপাকে পড়েছেন বার্গাচাষিরা। তাদের নিজস্ব জমি না থাকায় অন্যের জমি বর্গা (আদি) নিয়েছেন। এর আগে বীজতলা করতে না পাড়ায় তাদের একমাত্র ভরসা হাটের চারা। ফলে অধিক দামে চারা কিনে চরম হিমশিম খাচ্ছেন তারা। শুধু চারায় নয়, সম্প্রতি বিদ্যুৎ, ডিজেল, সার-কিটনাশকের দাম বেড়ে যাওয়ায় বোরো আবাদে বাড়তি খরচ গুণতে হচ্ছে। যার কারণে অনেকটা দুশ্চিন্তায় কৃষক।
দেখা গেছে, কৃষকরা রিকশাভ্যান ও বাইসাকেল যোগে বস্তাভর্তি করে ধানের চারা এনে ওইসব হাটে বিক্রি করেছেন। আর ক্রেতারা মান যাচাই ও জাত নির্ণয়ে চাহিদা মতো চারা কিনছেন। রীতিমতো সেখান থেকে চাষিরা চারা কিনে নিয়ে জমিতে রোপণ করছেন।
চারা বিক্রেতা মোখলেছুর রহমান বলেন, আমার জমির বীজতলায় চারা উৎপাদন করা হয়। নিজের জমিতে চারা লাগানো হয়ে যাওয়ায় অতিরিক্ত ১০ পোন চারা হাটে বিক্রি করলাম। এই চারা বিক্রির জন্য দালালকে টাকা দিতে হয়েছে। এছাড়া প্রতিপোন চারা বিক্রি বাবদ ২০ টাকা হারে হাট ইজারাদারকেও দিতে হয়েছে।
চারা কিনতে আসা নেহাজ উদ্দিন জানান, এ বছরে দুই বিঘা জমিতে বোরো ধান আবাদ করবেন। এরই মধ্যে শীতের কারণে তার বীজতলার ৫০ ভাগ চারা নষ্ট হয়েছে। ফলে চারা সঙ্কটের কারণে হাইব্রিড জাতের ১ পোন চারা (২০ গোন্ডা) ৪৫০ টাকা ও দেশিয় চিকন জাতের চারা ৩০০ টাকা দিয়ে কিনেছেন। এভাবে ৪ পোন চারা ক্রয় করেছেন এই কৃষক। এক্ষেত্রে ইজারাদার ও দালালকে টাকা দিতে হয়েছে।