শুক্রবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:২৩ পূর্বাহ্ন
সুন্দরগঞ্জ প্রতিনিধিঃ সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর ইউনিয়নের লাঠশালার দূর্গম চরাঞ্চলে গড়ে উঠা বিনোদন কেন্দ্র আলীবাবা থিম পার্কে যুবলীগের চাঁদা দাবিকে কেন্দ্র করে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। গত শুক্রবার সাড়ে ১১টার সময় পাশ্ববর্তী রংপুরের পীরগাছা উপজেলার ছাওলা ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি শাহ আলম বাদশার নেতৃত্বে ১৮ হতে ২০ জন যুবক দেশীয় অস্ত্র ও পিস্তুল নিয়ে হামলা চালায়। এ সময় তারা পার্কের ম্যানেজারের কক্ষ, টিকিট কাউন্ডার ভাঙচুর করে। ম্যানেজারের কক্ষে থাকা বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবিও ভাঙচুর করে তারা। খবর পেয়ে পুলিশ ও চরবাসি ঘটনাস্থলে ছুটে গেলে তারা পালিয়ে যায়। গতকাল শনিবার দুপুরে ম্যানেজার বাদী হয়ে ৪৮ জন এজাহার নামীও এবং ৮০ হতে ৯০ জন অজ্ঞাতনামা আসামি করে থানায় মামলা করেছে।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন থেকে যুবলীগ সভাপতি বাদশা ম্যানেজারের নিকট চাঁদা দাবি করে আসছিল। ঘটনার দিন গত শুক্রবার ১৮ হতে ২০ জন যুবক টিকিট না কেটে পার্কে প্রবেশের অনুমতি চায়। গেটম্যান শহিদুল ইসলাম বিষয়টি ম্যানেজার তাওহীদুল ইসলাম তোহিদকে অবগত করেন। ম্যানেজার আসলে উভয়ের মধ্যে বাকবিতন্ডা শুরু হয়। এরই এক পর্যায় যুবলীগ নেতাকর্মীরা দেশীয় অস্ত্র রাম দা, চাকু, ছুরি, চাইনিজ কুড়াল ও পিস্তুল উছিয়ে পার্কে ভিতরে প্রবেশ করে। যুবকরা টিকিট কাউন্টার, ম্যানেজারের কক্ষে প্রবেশ করে এ্যালোপাথারি ভাঙচুর করে।
প্রত্যক্ষদর্শী লাঠশালা চরের আব্দুর রাজ্জাক জানান, তিনি পার্কের গেটের সামনে দাড়িয়ে এক দর্শণার্থীর সাথে কথা বলছিল। হঠাৎ ১৮ হতে ২০ জন যুবক পার্কের গেটের সামনে এসে গেটম্যানের সাথে ভিতরে প্রবেশ করা নিয়ে বাকবিতন্ডা শুরু করে। এরই এক পর্যায় ধাক্কা দিয়ে গেট খুলে তারা ভিতরে প্রবেশ করে ভাঙচুর শুরু করে। কিছুক্ষণ পরে তারা চলে যান।
ম্যানেজার তাওহিদুল ইসলাম তৌহিদ জানান, দীর্ঘ একমাস থেকে পীরগাছার ছাওলা ইউনিয়নের যুবলীগ সভাপতি শাহ আলম বাদশা এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিল। ম্যানেজার তাকে চাঁদা দিবে না জানিয়ে দেয়। এরপরও বাদশা ৩ হতে ৪ দিন চাঁদা নিতে আসে। সর্বশেষ বাদশা ম্যানেজারকে জানিয়ে দেয়, চাঁদা না দিলে তারা পার্ক বন্ধ করে দিবে। চাঁদা না দেয়াকে কেন্দ্র করে তারা গত শুক্রবার পার্কে হামলা চালিয়ে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবিসহ প্রায় ৪ লাখ টাকার সম্পদ ভাঙচুর করে।
পার্কের স্বত্তাধিকারি ইয়ার আলী জানান, পার্কটিকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য স্থানীয় নেতাকর্মীদের সাথে কোন ঝামেলায় যেতে চাইনি। সে কারণে দীর্ঘদিন থেকে চাঁদা দাবি করে আসলেও কোন প্রকার আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। তাছাড়া যেসব নেতাকর্মী চাঁদা দাবি করেছিল তাদের দখলে ছিল পার্কের একমাত্র চলাচলের রাস্তা। বিষয়টি নিয়ে কয়েক দফা সমঝোতার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তারা পার্কের মঙ্গল চায়নি। সে কারণে আইনগতভাবে সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানান তিনি।