শুক্রবার, ৩১ মার্চ ২০২৩, ০৯:৩৭ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টারঃ পলাশবাড়ীতে অচেনা সেই প্রাণীর আক্রমণ থামছে না। গত দুইদিনে এই প্রাণীর আক্রমণে আরও দুইজন নারী আহত হয়েছেন। এ নিয়ে আহতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৪ জনে। ফলে মানুষের মধ্যে এখনো আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এলাকাবাসী জানায়, গত রবিবার সকাল থেকে গত সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত নতুন করে দুইজন নারী ওই প্রাণীর আক্রমণের শিকার হয়েছেন। তাদের মধ্যে গত সোমবার দুপুরে পলাশবাড়ী উপজেলার পবনাপুর ইউনিয়নের বরকতপুর গ্রামের আসাদুল ইসলামের স্ত্রী হাসনা বেগম (৩০) এবং গত রবিবার সকালে পার্শ্ববর্তী গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার নাকাই ইউনিয়নের ডুমুরগাছা গ্রামের মৃত সাত্তার মিয়ার স্ত্রী মোফেলা বেগম (৫৫) আক্রান্তের শিকার হন। হাসনা বেগমকে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অপরজনকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
চিকিৎসাধীন হাসনা বেগম জানান, তিনি গত সোমবার দুপুরে বরকতপুর কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে ওষুধ নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে শেয়ালের মত দেখতে একটি প্রাণী দৌড়ে এসে তাকে আক্রমণ করে। প্রাণীটি তার কোমরের নিচে কামড় দিয়ে পালিয়ে যায়। এতে তিনি চিৎকার দিয়ে উঠলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে। পরে তাকে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।
নাকাই ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আবদুল মান্নান জানান, গত রবিবার সকালে মোফেলা বেগম বাড়ির আঙিনায় সাংসারিক কাজ করছিলেন। এসময় একটি প্রাণী তার বাম পায়ে কামড় দিয়ে পালিয়ে দেয়। পরে ওই নারীর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে। তাকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এসব বিষয়ে সন্ধ্যায় গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) তানভীর রহমান বলেন, হাসনা বেগমের কোমরে যে আঘাতের ক্ষত, তা কোন প্রাণীর আক্রমণ থেকেই হয়েছে। তাকে অ্যান্টি রেবিস ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। তিনি ভালো আছেন।
প্রসঙ্গত, গত দেড়মাস ধরে পলাশবাড়ী উপজেলার ছয়টি গ্রামে অচেনা এই প্রাণীর আক্রমণ শুরু হয়েছে। গ্রামগুলো হচ্ছে তালুক কেঁওয়াবাড়ি, হরিণাথপুর, কিশামত কেঁওয়াবাড়ি, খামার বালুয়া, দুলালেরভিটা ও তালুকজামিরা। এই সময়ে এই প্রাণীর আক্রমণে ফেরদৌস ইসলাম নামের একজনের মৃত্যু এবং অন্তত ১৪ জন আহত হয়েছেন।
আক্রান্তদের দাবি, প্রাণীটি দেখতে শিয়ালের মতো। প্রাণীটির মাথা ও লেজ আকারে বড়। প্রাণীটি ঝোপ-জঙ্গল, ধানের জমি থেকে বেরিয়ে এসে আক্রমণ করছে। বর্তমানে এই প্রাণীর আক্রমণ পার্শ্ববর্তী গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার একটি গ্রামেও ছড়িয়ে পড়েছে।